পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

श्रृंहनोई রকম পাশ কাটাইয়া রহিল, এবং প্রভাতে এক সময়ে অচলাকে নিভৃতে পাইয়া কছিল, তোমাকে একটা কথার জবাব দিতে হবে । অলচার মুখ রাঙা হইয়া উঠিল। প্রশ্নটা যে কি, সে তাহার অগোচর ছিল না । গত রাত্রির সেই তাহার অদ্ভুত আচরণের কৈফিয়ৎ দিতে হইবে বুঝিয়া সে আরক্তমুখে মৃদুকণ্ঠে কহিল, কি কথা ? - স্বরেশ আস্তে আস্তে বলিল, কাল মৃণাল হঠাৎ আমার পায়ের ধূলো নিয়ে উঠে গেল, তুমিও মুখ ভার করে রাগ করে চলে গেলে, সে কি তার শাশুড়ীর মরণের কথা বলেছিলুম বলে ? এই অপ্রত্যাশিত প্রশ্নে অচলা একটা পথ দেখিতে পাইয়া মনে মনে খুশী হইয়া বলিল, এ-রকম প্রসঙ্গ কি তোমার তোলা উচিত ছিল ? সে বেচারার স্বামী নেই। শাশুড়ীর মৃত্যুতে তার নিঃসহায় অবস্থাটা একবার ভেবে দেখ দিকি ! সুরেশ অতিশয় ক্ষুব্ধ হইয়া কহিল, আমার ভারি অন্যায় হয়ে গেছে। কিন্তু তিনি যে আর বেশিদিন বাঁচতে পারেন না, এ ত মৃণাল নিজেও বোঝে। তা ছাড়া সে নিঃসহায় হবেই বা কেন ? অচলা জবাব দিল, এ-কথা আমবা ত তাকে একবারও বলিনি। বরঞ্চ তুমি তাকে নানারকমে ভয় দেখালে, দেশে সে একলাটি থাকবে কেমন করে ! স্বরেশ অত্যন্ত অমৃতপ্ত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, তা হলে সে যাবার পূৰ্ব্বে আমার কি তাকে সাহস দেওয়া উচিত নয় ? তার যে কোন ভয় নেই, এ-কথা কি তাকে— বলিতে বলিতেই অকৃত্রিম করুণায় তাহার কণ্ঠ সজল হইয়া আসিল । অচলা তাহার মুখের পানে চাহিয়া হাসিল । এই পরদুঃখকাতর সপ্তদয় যুবকের সহস্ৰ দয়ার কাহিনী তাহার চক্ষের নিমিষে মনে পড়িয়া গেল। ঘাড় নাড়িয়া বলিল, তোমার সাহস দিতেও হবে না, ভয় দেখিয়েও কাজ নেই। যখন যে সময় মাসবে, তখন আমি চুপ করে থাকব না। সুরেশ আত্মবিশ্বত আবেগভরে অকস্মীথ তাহার হাতখানা সজোরে চাপিয়া ধরিয়া প্রচণ্ড একটা নাড়া দিয়া বলিয়া উঠিল, এই ত তোমার যোগ্য কথ। । এই ত তোমার কাছে আমি চাই অচলা ! বলিয়া ফেলিয়াই কিন্তু অপরিসীম লক্ষায় হাত ছাড়িয়। দিয়া উৰ্দ্ধশ্বাসে পলায়ন করিল। তাহার যে উচ্ছ্বাস মুহূৰ্ত্ত পূর্বে পরার্থতার নির্মল আনন্দের মধ্যে জন্মলাভ করিয়াছিল, এই লজ্জিত পলায়নে তাহা এক নিমিষেই কদৰ্য্য কলুষিত হইয়া দেখা দিল । অচলায় বুকের রক্ত বিদ্যুৎবেগে প্রবাহিত হইয়া বিন্দু বিন্ধু ঘামে ললাট ভরিয়া উঠিল এবং সৰ্ব্বাঙ্গ বারংবার শিহরিয়া উঠিয় নিকটবর্তী একখান চেয়ারের উপর সে নিজীবের মত বসিয়া পড়ল। কিছুক্ষণে তাহার লে ভাবট কাটা গেল \9 ጙ÷››