পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

श्रृंश्लोह মান মুখখানির প্রতি একদৃষ্টি চাহিয়াছিল তাহ কেহই দেখে নাই । সে এখন ধীরে ধীরে কছিল, নার্গের হাতে আমার ওষুধ পৰ্য্যন্ত খেতে প্রবৃত্তি হবে না স্বঘ্নেশ। তবে ওঁকে সাহায্য করবার একজন লোক দাও। কাল-পরশু দুটো রাত্রিই ওঁকে সারারাঞ্জি জাগতে হয়েচে । দিনের-বেলায় একটু বিশ্রামের অবকাশ না পেলে কলের মানুষকে দিয়েও কাজ পাবে না ভাই। কথাটা বর্ণে বর্ণে সত্য না হইলেও মিথ্যা নয়। স্বরেশ খুশী হইয়া মুখ তুলিল, কিন্তু কেদারবাৰু নিজের রূঢ়বাক্যে লজ্জা পাইয়া কোন-কিছু একটা বলিবার উদ্যোগ করিতেই অচলা ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল । রাত্রে তাহার অনেকবার ইচ্ছা করিতে লাগিল, রুগ্ন স্বামীর কাছে বহু অপরাধের জন্ত কঁাদিয়া ক্ষমা ভিক্ষা চাহিয়া একবার জিজ্ঞাসা করে, তাহার মত পাপিষ্ঠীকে তিরষ্কার হইতে বাচাইবার জন্য র্তাহার কি মাথাব্যথা পড়িয়াছিল । কিন্তু নিদারুণ লজ্জায় কোনমতে এ প্রশ্ন তাহার মুখ দিয়া বাহির হইতে চাহিলনা । স্বরেশের একটা কাজ ছিল, প্রতিদিন অনেক রাত্রে সে একবার করিয়া মহিমের ঘরে ঢুকিয়া প্রয়োজনীয় সমস্ত বন্দোবস্ত ঠিক করিয়া দিয়া তবে শুইতে যাইত । মৃণাল থাকিতে প্রায় সারারাত্রিই আনাগোনা করিত, এবং তাহার আবশ্বকও ছিল ; কিন্তু কয়দিন হইতে দেখা গেল, সে সহজে আর ঘরে প্রবেশ করে না । প্রয়োজন হইলে দাসী পাঠাইয়া খবর লয়, শুধু সন্ধ্যার প্রাক্কালে ক্ষণকালের জন্ত একটিবার মাত্র নিজে আসিয়া সংবাদ গ্রহণ করে। তাহার এই নূতন আচরণ সকলের অগ্ৰে অচলার দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছিল ; কিন্তু এ-বিষয়ে সামান্য একটু মন্তব্য প্রকাশ করাও তাহার পক্ষে সম্ভবপর নহে, তাই সে মৌন হইয়াই ছিল ; কিন্তু যেদিন মহিম নিজে ইহার উল্লেখ করিল, তখন তাহাকে বলিতেই হইল, আজকাল অধিকাংশ সময় বাটতেও থাকেন না এবং ইহার হেতু কি, তাহাও সে জানে না । মহিম চুপ করিয়া শুনিল, কোনপ্রকার মতামত প্রকাশ করিল না । পরদিন সকালে অচলা নীচে নামিতেছিল, এবং স্বরেশও কি একটা কাজে এই সিড়ি দিয়াই উপরেই উঠিতেছিল ; মুখ তুলিয়া অচলাকে দেখিবামাত্রই অন্তদিকে সরিয়া গেল। সে যে সৰ্ব্বপ্রকারে তাহাকেই পরিহার করিয়া চলিতেছে, এ-বিষয়ে আর তাহার সংশয়মাত্র রহিল না ; এবং একদিন যাহা সে সমস্ত মন দিয়া কামনা করিয়াছিল, আজ তাহার সেই মনই স্বরেশের আচরণে বেদনায় পীড়িত হইয়া উঠিল । $CO