পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भग्न६-जांहिष्ठ-जरáfई উপস্থিত হইলেন ; উভয়েই শশব্যস্ত হইয়া উঠিয় দাড়াইল, বীণাপাণি একখানি চৌকি টানিয়া বুদ্ধের সন্নিকটে স্থাপিত করিয়া উৎসুক হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, কেন বাবা । এই বৃদ্ধ অত্যন্ত নিষ্ঠাবান হিন্দু। তিনি ধীরে-স্বন্থে আসন গ্রহণ করিয়া অচলার মুখের প্রতি সস্নেহে প্রশান্ত দৃষ্টিপাত করিয়া কহিলেন, একটা কথা আছে মা । ভট চাষিামশাই এইমাত্র এসেছিলেন, তিনি তোমাদের স্বামীর-স্ত্রীর নামে সঙ্কল্প করে নারায়ণকে তুলসী দিচ্ছিলেন, তা কাল শেষ হবে। তবে কাল তোমাকে মা, কষ্ট স্বীকার করে একটু বেল পৰ্যন্ত অভূক্ত থাকতে হবে। তিনি আমাদের বাড়িতেই নারায়ণ এনে কাজ সমাপ্ত ক’রে যাবেন, আর কোথাও তোমাকে যেতে হবে না । কথা শুনিয়া অচলার সমস্ত মুখ একেবারে কালিবর্ণ হইয়া উঠিল। মান আলোকে বুদ্ধের তাহা নজরে পড়িল না, কিন্তু বীণাপাণির তাহ পড়িল। সে হিন্দুঘরের মেয়ে, জন্মকাল হইতে এই সংস্কারের মধ্যেই মানুষ হইয়াছে এবং পীড়িত স্বামীর কল্যাণে ইহা যে কত উৎসাহ ও আনন্দের ব্যাপার, তাহ সে সংস্কারের মতই বুঝে, কিন্তু অচলার মুখের চেহারার এই উৎকট পরিবর্তনে তার বিস্ময়ের অবধি রহিল না। তথাপি সখীর হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, আচ্ছা বাবা, নারায়ণকে তুলসী দেওয়ালে ত তুমি স্বরেশবাবুর জন্তে, তবে উনি উপোস না করে দিদিকে করতে হবে কেন ? বুদ্ধ সহাস্তে কহিলেন, তিনি আর তোমার এই দিদিটি কি আলাদা মা ? জ্বরেশবাবু ত তার এ অবস্থায় উপবাস করতে পারবেন না, তাই তোমার স্বরমাদিদিকেই করতে হবে । শাস্ত্রে বিধি আছে মা, কোন চিন্তা নাই। অচলা ইহারও প্রত্যুত্তরে যখন ই-না কোন কথাই কছিল না, তখন তাহার এই নিরুদ্যম নীরবতা অকস্মাৎ এই শুভানুধ্যায়ী বৃদ্ধেরও যেন চোখে পড়িয়া গেল। তিনি সোজা অচলার মুখের প্রতি চাহিয়া প্রশ্ন করিলেন, এতে তোমার কোন আপত্তি আছে সুরমা ? বলিয়া একান্ত ও পুনঃ পুনঃ প্রতিবাদের প্রত্যাশায় চাহিয়া রহিলেন । অচলা সহসা ইহারও কোন প্রত্যুর দিতে পারিল না। কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া ধীরে ধীরে মৃত্নকণ্ঠে কহিল, তাকে বললে তিনিই করবেন বোধ হয়। তাহার পরে সকলেই নীরব হইয়া রহিল। কথাটা ষে কিরূপ বিসদৃশ, কত কটু ও নিষ্ঠুর শুনাইল, তাহা যে ব্যক্তি উচ্চারণ করিল, তাহার অপেক্ষ বোধ করি কেহই অনুভব করিল না, কিন্তু অন্তর্যামী ভিন্ন সে-কথা আর কেহ জানিতে পারিল না। বুদ্ধ উঠিয়া দাড়াইয়া কহিলেন, তবে তাই হবে, বলিয়া ধীরে ধীরে নীচে নামিয়া গেলেন। ভূত্য আলো দিয়া গেল, কিন্তু দুজনেই সঙ্কুচিত ও কুষ্ঠিত হইয়া তেমনি নিঃশবে বসিয়া রহিল। মাসিকপত্রের সেই অত বড় উত্তেজক ও বলশালী গল্পের বাকীটুকু শেষ করিবার মত জোৱও কাহারও মধ্যে রছিল না। ծՊեր