পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/৩১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিন্দুর ছেলে যতক্ষণ না সেই এক ফোটা লোকটি এসে বাড়িতে পা দিলে ?—ওয়ে, তোরা আর সে ? তার কড়ে আঙুলের ক্ষমতাও তোদের বাড়িমৃদ্ধ লোকের নেই। বিন্দুর মা ঢুকিয় বলিলেন, জামাইয়ের মত আছে বিন্দু, তুইও দিন-কতক মামাদের সঙ্গে ঘুরে আসবি চল । বিন্দু মায়ের মুখের দিকে চাহিয়া থাকিয়া বলিল, আমার যাওয়া না-যাওয়া কি উার মতামতের উপর নির্ভর করে মা, যে, তিনি বললেই যাব ? আমার শত্রুর হুকুম না পেলে যাই কি করে ? মা কথাটা বুঝিয়া বলিলেন, তোর জায়ের কথা বলচি ? তার আর হুকুম নিতে হবে না। যখন আলাদা হয়ে তোরা চলে এসেচিদ, তখন উনি বললেই হ’ল । বিন্দু মাথা নাড়িয়া বলিল, না, তা হয় না । যতক্ষণ বেঁচে আছে ততক্ষণ যেখানেই থাক্, সেই সব । আর যাই করি মা, তাকে না বলে বাড়ি ছেড়ে যেতে পারব ন!— বঠ ঠাকুর তা হলে রাগ করবেন। .* এলোকেশী এইমাত্র উপস্থিত হইয়া শুনিতেছিলেন, বলিলেন, আচ্ছা, আমি বলচি তুমি যাও। বিন্দু সে-কথার জবাব দিল না। মা বলিলেন, বেশ ত, না হয় লোক পাঠিয়ে তার মত নে না বিন্দু। বিন্দু আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিল, লোক পাঠিয়ে ? সে ত আরও মন্দ হবে মা ? আমি তার মন জানি, মুখে বলবে যাক, কিন্তু ভেতরে ভেতরে রেগে থাকবে, হয়ত বঠ ঠাকুরকে পাচটা বানিয়ে বলবে—না মা, তোমরা যাও, আমার যাওয়া হবে না । মা জিদ করিলেন না, চলিয়া গেলেন । এবার ফাক বাড়ি প্রতি মূহূত্তে। তাহাকে গিলিবার জন্য র্হা করিতে লাগিল । নীচের একটি ঘরে এলোকেশীরা থাকেন, দোতলার একটি ঘর তাহার নিজের, আর সমস্ত খালি খ খ করিতে লাগিল। সে শূন্য মনে ঘুরিতে ঘুরিতে তেতলার একটি ঘরে আসিয়া দাড়াইল । কোন স্থদুর ভবিষ্যতে পুত্র-পুত্রবধূর নাম করিয়া এই ঘরখানি সে তৈরী করাইয়াছিল। এইখানে ঢুকিয়া সে কিছুতেই চোখের জল রাখিতে পারিল না। নীচে নামিয়া আসিতেছিল, পথে স্বামীর সহিত দেখা হইবামাত্রই সে বলিয়া উঠিল, ই গা, কি-রকম হবে তবে ? মাধব বুঝতে না পারিয়া বলিল, কিসের ? বিন্দু আর জবাব দিতে পারিল না । হঠাৎ দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিল, না না, তুমি যাও—ও কিছু না। - 软 was on