পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/৩৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ ইহাতে সংশয় না থাকিতে পারে। কিন্তু অমৃতের সকল সস্তানই কাচা ঘাস হজম করিতে পারিবে কি না, তাহাতেও কি সংশয় নাই ! কিন্তু আমি বলি, এই উদর এবং জিহবার উপর নির্ভর না করিয়া বুদ্ধি এবং দৃষ্টিশক্তির সাহায্য লইয়া কাটাগাছগুলা বাছিয়া ফেলিয়া, সেই অমৃত-লতাটির সন্ধান করিলে কি কাজটা অপেক্ষাকৃত সহজ এবং মানুষের মত দেখিতে হয় না ! ভগবান মানুষকে বুদ্ধি দিয়াছেন কিজস্ত ? সে কি শুধু আর একজনের লেখা শাস্ত্রীয় শ্লোক মুখস্ত করিবার জন্য ? এবং একজন তাহার' কি টকা করিয়াছেন এবং আর একজন সে টীকার কি অর্থ করিয়াছেন—তাহাই বুঝিবার জন্য ? বুদ্ধির আর কি কোন স্বাধীন কাজ নাই ? কিন্তু বুদ্ধির কথা তুলিলেই পণ্ডিতেরা লাফাইয় উঠেন ; কুৰ হইয়া বারংবার চীৎকার করিতে থাকেন। শাস্ত্রের মধ্যে বুদ্ধি খাটাইবে কোনখানে ? এ যে শাস্ত্র! তাহাদের বিশ্বাস, শাস্ত্রীয় বিচার শুধু শাস্ত্ৰ-কথার লড়াই। তাহার হেতু, কারণ, লক্ষ্য, উদ্দেশু, সত্য, মিথ্যা, এ-সকল নিরূপণ করা নয়। শাস্ত্র-ব্যবসায়ীরা কতকাল হইতে যে এরূপ অবনত হীন হইয়া পড়িয়াছেন, তাহা জানিবার উপায় নাই—কিন্তু এখন তাহদের একমাত্র ধারণা যে, ব্ৰহ্মপুরাণের কুস্তির প্যাচ বায়ুপুরাণ দিয়া খসাইতে হইবে। আর পরাশরের লাঠির মার হারাতের লাঠিতে ঠেকাইতে হইবে। আর কোন পথ নাই। সুতরাং যে ব্যক্তি এই কাজটা যত ভাল পারেন, তিনি তত বড় পণ্ডিত। ইহার মধ্যে শিক্ষিত ভদ্র ব্যক্তির স্বাভাবিক সহজ বুদ্ধির কোন স্থানই নাই। কারণ, সে শ্লোক ও ভাষ্য মুখস্থ করে নাই। অতএব, হে শিক্ষিত ভদ্র ব্যক্তি ! তুমি শুধু তোমাদের সমাজের নিরপেক্ষ দর্শকের মত মিটমিটু করিয়া চাহিয়া থাক, এবং শাস্ত্রীয় বিচারের আসরে স্মৃতিরত্ব আর তর্করত্ন কণ্ঠস্থ শ্লোকের গদক ভাজিয়া যখন আসর গরম করিয়া তুলিবেন, তখন হাততালি দাও । কিন্তু তামাশা এই যে, জিজ্ঞাসা করিলে এইসব পণ্ডিতেরা বলিতে পারিবেন না— কেন তারা ও রকম উন্মত্তের মত ওই যন্ত্রটা ঘুরাইয়া ফিরিতেছেন । এবং কি তাদের উদ্বেগু ! কেনই বা আচারটা ভাল বলিতেছেন এবং কেনই বা এটার বিরুদ্ধে এমন বাকিয়া বসিতেছেন। যদি প্রশ্ন করা যায়, তখনকার দিনে যে উদেখ বা ষে দুঃখের নিষ্কৃতি দেবার জন্ত অমুক বিধি-নিষেধ প্রবর্তিত হইয়াছিল—এখনও কি তাই আছে ; ইহাতেই কি মঙ্গল হইবে ? প্রত্যুত্তরে স্মৃতিরত্ব র্তাহার গদক বাহির করিয়া তোমার সম্মুখে যুৱাইতে থাকিবেন, যতক্ষণ না তুমি ভীত ও হতাশ হইয়া চলিয়া যাও। এইখানে আমি একটি প্রবন্ধের বিস্তৃত সমালোচনা করিতে ইচ্ছা করি। কারণ, তাহাতে আপনা হইতেই অনেক কথা পরিস্ফুট হুইবার সম্ভাবনা। প্রবন্ধটি অধ্যাপক প্রভাবিভূতি ভট্টাচাৰ্য বিদ্যাভূষণ এম. এ. লিখিত “খেদে চাতুৰ্ব্বর্ণ ও আচার" ૭૭૭