পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/৩৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপ্রকাশিত রচনাবলী পাওয়া যায়। আজ ইহাদের কথাই বলি। শ্ৰীমতী ঘোষজায়ার লেখা নাকি রবিবাবুর লেখা বলিয়া অনেকের ভ্রমও হয়। অবশু জমের হেতুও আছে। 3. আমি পূর্বেই বলিয়াছি, রবিবাবুর সত্য অমুকরণ যত কঠিনই হউক, বিকৃত করা খুব সহজ। ও আর কিছু নয়—আমার নিম্নলিখিত এই তালিকাটি মুখস্থ করিলেই হইবে। যদি মুখস্থ না হয়, বড় বড় অক্ষরে লিখিয়া টেবিলের সম্মুখে টাঙ্গাইয়া দিয়া নিজের রচনার মধ্যে মধ্যে এক একটা প্রবেশ করাইয়া দিলেই কাজ হইবে। হরির লুটের বাতাসা কোচড়েই পড়ুক, আর পায়ের নীচেই পড়ুক, নিফল হইবে না। মুখস্থ করুন—পরিণতি, বিশ্ব, মানব, দেহান্বয়, ভূমিষ্ঠ, গরিষ্ঠ, মুখর, চাই-ই, বনস্পতি, প্রয়োজন হইয়াছে, ফাকি, দৈন্ত, পুষ্টি-সাধন, দেবতা, অমৃত, শ্রেয়, ভূম, আশীৰ্ব্বাদ, অর্ঘ্য, আবহমানকাল, শ্রেষ্ঠ, বাণী, খাট, ভারতবর্ষ, নিষ্ঠ, জাগ্রত, জন্ম, সত্ত্ব, দিন আসিয়াছে, তপশ্চৰ্য্য, বৈরাগ্য, শ্রদ্ধা, জো-নাই, খাটো, পাৎলা, ডাক, পড়িয়া গিয়াছে, মুক্তির আনন্দ ও ত্যাগের আনন্দ। ব্যস, এই কয়টিই যথেষ্ট। একটা রচনার মধ্যে সব ক’টা ব্যবহার করিতে পার উত্তম, না পার ভূম, অৰ্ঘ্য, দেবতা, বৈরাগ্য ও ভারতবর্ষ এই পাঁচটি চাই-ই । অন্যথা রচনাই নয়। এখন কেহ যদি অবিশ্বাস করিয়া বলেন, তা কি হয় ? শব্দগুলো যদৃচ্ছা গুজিয়া দিলে লোকে ধরিয়া ফেলিবে যে ! ইহার উত্তরে আমার নজির দেওয়া ছাড়া আর উপায় নাই। গত অগ্রহায়ণের ভারতীতে শ্ৰীমতী আমোদিনী ঘোষজায়ার আট পাতা জোড়া এক প্রবন্ধ বাহির হইয়াছিল। নাম “মমুস্তত্বের সাধনা" । টাইটেল দেখিয়াই ‘বাপরে | করিয়া উঠিলে চলিবে না। ভক্তি করিয়া পড়া চাই। আমার তালিকার প্রায় সকল শব্দগুলোই ইহাতে আছে, স্বতরাং ইহা খুব ভাল, এবং শিক্ষণ হইবে। তবে, অভিধানের সাহায্যে সবটুকু পড়িয়া কেহ যদি শেষকালে বলেন, এই আট পাতার ত আট ছত্রেরও মানে হয় না, তাহা হইলে আমি চুপ করিয়া থাকিব বটে, কিন্তু কবুল করিব না, এবং মনে মনে রাগ করিয়া বলিব, তবু তোমার শিক্ষা হুইল ত ! যাহা হউক, আমি নজির দিব বলিয়াছি, কিন্তু সমালোচনা করিব বলি নাই। সমালোচনা করা পণ্ডশ্রম। আমি বলিব, তোমার রচনার মানে নাই ; তুমি জবাব দিবে, ‘আছে।' আমি বলিব, এই জায়গাটায় বাড়াবাড়ি কারিয়াছ ; তুমি বলিবে, "একটুও না ; এমন না করিলে লেখা ফুটিত না।” আমি বলিব, “এই স্থানটার আর একটু প্রকাশ করা উচিত ছিল ; তুমি বলিবে, “নিশ্চয় না ; আর প্রকাশ করিতে গেলে আর্ট মাটি হইয়া যাইত।” বাস্তবিক, এ-সব তর্কের মীমাংসা হয় না। একেই লেখা বলে এবং এই বিবেচনার উপরেই লেখকের যথার্থ কৃতিত্ব নির্ভর করে। সমালোচনা করিয়া দোষ-গুণ দেখাইয়া নিন্দ বা স্থখ্যাতি করা যায় বটে, কিন্তু আর কোন कांछ एञ्च नां । vg g