পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

श्रुश्माइ আর চাইনে। কিন্তু, এটুকু থেকে যেন আমাকে বঞ্চিত করে না । গাড়ি বাটীর সম্মুখে আসিয়া দাড়াইল ! সহিস দ্বার খুলিয়া সরিয়া গেল, স্বরেশ নিজে নামিয়া সযত্বে সাবধানে অচলার হাত ধরিয়া তাহাকে নীচে নামাইয়া উভয়েই এক সঙ্গে চাহিয়া দেখিল, ঠিক সম্মুখে মহিম দাড়াইয়া এবং সেই নিমিষের দৃষ্টিপাতেই এই দুটি নর-নারী একেবারে যেন পাথরে রূপান্তরিত হইয়া গেল । পরক্ষণেই অচলা অব্যক্ত আৰ্ত্তস্বরে কি একটা শব্দ করিয়া সজোরে হাত টানিয়া লইয়া পিছাইয়া দাড়াইল । মহিম বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হইয়া কহিল, স্বরেশ, তুমি যে এখানে ? স্বরেশের গলা দিয়া প্রথমে কথা ফুটিল না । তার পরে সে একটা ঢোক গিলিয়া পাংশুমুখে শুষ্ক হাসি টানিয়া আনিয়া বলিল, বাং—মহিম যে ! আর দেখা নেই! ব্যাপার কি হে? কবে এলে ? চল, চল, ওপরে চল । বলিয়া কাছে আসিয়া তাহার হাতটা নাড়িয়া দিয়া হাসির ভঙ্গিতে কহিল, আচ্ছা কাজ করলে কিন্তু আপনার বাবা । তিনি গেলেন সমাজে, আর পৌঁছে দেবার ভার পড়ল এই গরীবের ওপরে। তা একরকম ভালই হয়েচে–নইলে মহিমের সঙ্গে হয়ত দেখাই হ’ত না । বাড়িতে এতদিন ধরে করছিলে কি বল ত শুনি ? * মহিম কহিল, কাজ ছিল । বিস্ময়ের প্রভাবে তাহার অচলাকে একটা নমস্কার করিবার কথাও মনে হইল না । স্বরেশ তাহাকে একটা ঠেলা দিয়া বলিল, আচ্ছা লোক যা হোক্‌ ! আমরা ভেবে মরি, একটা চিঠি পৰ্য্যস্ত দিতে নেই? দাড়িয়ে রইলে কেন ? ওপরে চল । বলিয়া তাহাকে একরকম জোর করিয়া উপরে ঠেলিয়া লইয়া গেল । কিন্তু বসিবার ঘরে আসিয়া যখন সকলে উপবেশন করিল, তখন অত্যন্ত অকস্মাৎ তাহার অস্বাভাবিক প্ৰগল্‌ভতা একেবারে থামিয়া গেল। গ্যাসের তীব্র আলোকে মুখখান তাহার কালিবর্ণ হইয়া উঠিল। মিনিট দুই-তিন কেহই কথা কহিল না। মহিম একবার বন্ধুর প্রতি একবার অচলার প্রতি শূন্ত দৃষ্টিপাত করিয়া তাহাকে শুম্বকণ্ঠে প্রশ্ন করিল, খবর সব ভাল ? - অচলা ঘাড় নাড়িয়া জবাব দিল, কিন্তু মুখ তুলিয়া চাহিল না। মহিম কহিল, আমি ভয়ানক আশ্চৰ্য্য হয়ে গেছি—কিন্তু স্বরেশের সঙ্গে তোমাদের আলাপ হল কি করে ? . অচলা মুখ তুলিয়া ঠিক যেন মরিয়া হইয়া বলিয়া উঠিল, উনি বাবার চার হাজার টাকা দেনা শোধ করে দিয়েচেন । তাহার মুখ দেখিয়া মহিমের নিজের মুখ দিয়া শুধু বাহির হইল—তার পরে ? তার পরে তুমি বাবাকে জিজ্ঞাসা করে, বলিয়া অচলা ত্বরিতপদে উঠিয়া বাহির 8 X وسسة۹