পাতা:শিক্ষার বিকিরণ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিক্ষার বিকিরণ

কারখানার গাড়িটাই যেন সত্য, আর প্রাণবেদনার পূর্ণ সমস্ত দেশটাই যেন অবাস্তব।

 সহরবাসী একদল মানুষ এই সুযোগে শিক্ষা পেলে, মন পেলে, অর্থ পেলে; তারাই হোলা এন‍্লাইটেন‍্ড, আলোকিত। সেই আলোর পিছনে বাকি দেশটাতে লাগল পূর্ণগ্রহণ। ইস্কুলের বেঞ্চিতে বসে যাঁরা ইংরেজি পড়া মুখস্থ করলেন শিক্ষাদীপ্ত দৃষ্টির অন্ধতায় তাঁরা দেশ বলতে বুঝলেন শিক্ষিত সমাজ, ময়ূর বলতে বুঝলেন তার পেখমটা, হাতি বলতে তার গজদন্ত। সেইদিন থেকে জলকষ্ট বলো, পথকষ্ট বলো, রোগ বলো অজ্ঞান বলো জমে উঠল কাংস্যবাদ্যমন্দ্রিত নাট্যমঞ্চের নেপথ্যে নিরানন্দ নিরালোক গ্রামে গ্রামে। নগরী হোলো সুজলা সুফলা টানাপাখাশীতলা, সেইখানেই মাথা তুললে আরোগ্যনিকেতন, শিক্ষার প্রাসাদ। দেশের বুকে এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে এত বড়ো বিচ্ছেদের ছুরি আর কোনোদিন চালানো হয়নি, সে কথা মনে রাখতে হবে। এ’কে আধুনিকের লক্ষণ বলে নিন্দা করলে চলবে না। কেননা কোনো সভ্য দেশেরই অবস্থা এ রকম নয়। আধুনিকতা সেখানে সপ্তমীর চাঁদের মত অর্দ্ধেক আলোয় অর্দ্ধেক অন্ধকারে খণ্ডিত হয়ে নেই। জাপানে পাশ্চাত্য বিদ্যার সংস্রব ভারতবর্ষের চেয়ে অল্পকালের, কিন্তু