পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৮
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

লাইট, পাখা, পালঙ্ক, বুককেস্, বৃহৎ আয়না, ছবি, মার্ব্বেল পাথরের টেবিল, মেজেতে লিনোলিয়াম পাতা, শুভ্র ফরাস্ বিছানা কোমল তাকিয়ায় শোভিত— রূপার পানের থালা, এস্‌ট্রে। কৃষ্ণনগরের সুন্দর মাটীর পুতুলে আলমারি সাজান। তিন সেট জড়োয়া গহনা— দুই সেট তোলা,— একসেট গায়ে। দামী বেনারসী সাড়ী ও ব্লাউজ তাহার বেড়াইবার পোষাক; শান্তিপুর ফরাসডাঙ্গার দেশী সাড়ী তাহার আটপৌরে কাপড়। তাহার ভাটিয়া বাবু তাহাকে মাসিক ৩০০ টাকা নগদ দিত। এতদ্ব্যতীত ঘর ভাড়া ও খাওয়াপরার খরচ চালাইত।

 কালীদাসীর এই সৌভাগ্য আলাদিনের প্রদীপের মত দুই তিন মাসের মধ্যে হইয়াছে। আমি দেখিয়া একেবারে স্তম্ভিত হইয়া গেলাম। কি উজ্জ্বল আশার আলোক আমি সম্মুখে দেখিতে পাইলাম! কোন সয়তান আমার অন্তরের মধ্যে বার বার জাগিয়া বলিতে লাগিল, এমন সৌভাগ্য তোমারও হ’তে পারে। আমি সেই আলেয়ার পশ্চাতে ছুটিলাম।

 পূর্ব্বেই বলিয়াছি কালাদাসা রূপসী ছিল। এখন ভালভাবে থাকিবার ফলে তাহার সৌন্দর্য্য আরও ফুটিয়া বাহির হইল। পাড়াগাঁয়ের মেয়ে হলেও কালীদাসী গান জানিত। আমিও তাকে কিছু শিখাইয়াছিলাম। এ বাড়ীতে তাহার এক মা জুটিয়াছে। কালীদাস। বলিল এই স্ত্রীলোকটিই তাহাকে এ ভাটিয়া বাবু যোগাড় করিয়া দিয়া হাড়কাটা গলি হইতে রামবাগানে আনিয়াছে। কালীদাসী আমাকেও ঐ পাড়াতে যাইতে পরামর্শ দিল। আমি সুযোগ অনুসন্ধান করিতে লাগিলাম।