প্রায়ই চঞ্চল চিত্ত এবং তাহারা কাহারও উপর নিজের মনকে স্থিরভাবে বসাইতে পারে না।
আমার চিকিৎসক বাবুটী আমাকে ছাড়িয়া অনেক নারীর প্রতি আসক্ত হইয়াছেন— সে সংবাদও আমি শুনিয়াছি। এমন কি গৃহস্থের ঘরেও তিনি নাকি কেলেঙ্কারী ঘটাইয়াছেন। খবরের কাগজে সেই ইঙ্গিত দিয়াছে। সত্য মিথ্যা ভগবান জানেন।
রামবাগানে আসিয়া আমার সুখে স্বচ্ছন্দে কাল কাটিতে লাগিল। কিন্তু আমার একটা দুঃখ মাঝে মাঝে প্রাণে জাগিয়া উঠিত। মুকুলদা অথবা কমলার কোন সংবাদ পাইতাম না। পিতা, মাতুল বা নন্দদাদা ইহাদের দেখা পাইতে আমার ভয় হইত; দেখা না হওয়াই বাঞ্ছনীয় ছিল। কিন্তু কমলা মুকুল-দা এই দুই জন ত আমার পাপ জীবনের গতির সূচনা জানে। সুতরাং তাহাদের জন্য প্রাণ ব্যাকুল হইত। পতিতার জীবন কিরূপ বিপদগ্রস্ত তাহা এই অল্প সময়েই আমি বুঝিয়াছি। আর সকলে আমায় ঘৃণা করে করুক— পায়ে ঠেলিয়া ফেলে ফেলুক— মুকুল-দা ও কমলা কখনও আমায় পরিত্যাগ করিতে পারিবে না, এ বিশ্বাস আমার দৃঢ় ছিল।
রামবাগানে আসিয়া আমি পড়াশুনায় মন দিলাম, বাবুকে বলিয়া পুস্তক রাখিবার জন্য একটী আলমারী কিনিলাম। বাংলা ইংরাজী সাহিত্য গ্রন্থাদি তাহাতে সাজাইলাম। বাবু আমার জ্ঞানপিপাসা দেখিয়া সন্তুষ্ট হইলেন। মাসিক সংবাদপত্র প্রবাসী ও ভারতবর্ষ তিনি আমায় কিনিয়া দিতেন। দৈনিক খবরের কাগজ তিনি আফিস হইতেই লইয়া আসিতেন। আমি তাহা পড়িতাম।