পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সমাজ চিত্র
১১৭

হয়—যাতে এক শঠ লম্পটের শাস্তি হয়, সেইরূপ মিথ্যা বলতে আমাদের জিহ্বায় আটকাবেন।

 বিদ্যাভূষণ মহাশয় বিশেষ কিছু না বলিয়া চলিয়া গেলেন, বুঝিলাম— তিনি ভয় পাইয়াছেন। কয়েক দিন পরে তিনি আসিয়া আমার হাতে একশত টাকা দিয়া বলিলেন “এর জন্য যা কিছু খরচ প্রয়োজন হয়, এই টাকা থেকে কর’বে”। আমি তাহা গ্রহণ করিলাম এবং স্ত্রীলোকটীর প্রয়োজনীয় জিনিষ-পত্র যোগাড় করিয়া দিলাম। যথাসময়ে ইহার প্রসব হইল। বিদ্যাভূষণ মহাশয় প্রসূতি ও সন্তানকে আমাদের বাড়ী হইতে সরাইয়া নিলেন। তারপর খবর লইয়া জানিয়াছিলাম, তিনি বিধবাটীকে বিশেষ অর্থ সাহায্য করেন নাই। এই লোকটার দুশ্চরিত্রের কথা অনেকেই জানিত। আরও কয়েকটী শিষ্যানীর সর্বনাশ তিনি করিয়াছিলেন। তামি তাঁহার চাকুরীস্থলে বেনামী চিঠিতে সমস্ত রহস্য প্রকাশ করিয়া দিয়াছিলাম। এমন সর্ব্বনেশে লোকের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। পরে শুনিয়াছিলাম, তাহার ভাল ভাল চাকুরী সব গিয়েছে। সংবাদ পাইলাম, তিনি নাকি বৃদ্ধ বয়সে এক ষোড়শী বালার পানি গ্রহণ করিয়া তাহার অন্তরের যৌবন ক্ষুধা মিটাইতেছেন। সমাজের যে অংশ ছাড়িয়া আসিয়াছি, তাহার এমন গলিত ক্ষত দেখিয়া, পতিতাদেরও ঘৃণায় নাক সিটকাইতে হয়।

 আমারদের বাড়ীর নিকটে সুশীলা নাম্নী এক বারবনিতা বাস করিত। সে এক নবাবের রক্ষিতা। তার বিপুল সম্পত্তি, অতুল ঐশ্যর্য্য। উহা আর বর্ণনা করিবার প্রয়োজন নাই। নবাব বহু লক্ষ টাকা ব্যয় করিয়া তাঁহার রাজধানীতে বিরাট প্রাসাদ