পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অগ্নি ক্রীড়া
১২৩

আন্দোলনের কর্ম্মক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গে মিশিয়া মদ্য-পান পর্য্যন্ত শিখিয়াছে। যে সকল যুবক এমন পবিত্র চিত্ত ছিল যে স্ত্রীলোকের সহিত কথা কহিবার সময় মাথা তুলিত না— তাহারা আমাদের সংসর্গে আসিয়া এখন বেশ্যা দূরে থাক্, কুলবধূর সহিত নির্ল্লজ্জের মত কুৎসিতু হাস্য পরিহাস করিতে অনেকে লজ্জিত হয় না। পতিতানারীদের একটী প্রধান স্বভাব এই যে তাহারা সচ্চরিত্র ও সংযত-চিত্ত পুরুষ দেখিলে তাহাকে হস্তগত করিতে বিশেষ চেষ্টা করে এবং তাহার সংযম ও পবিত্রতাকে বিনষ্ট করা একটা বীরত্বের কার্য্য বলিয়া মনে করে।

 আমি জানি, আমরা যে কয়জন এই অসহযোগ আন্দোলনের কার্য্য করিতে গিয়াছিলাম, তাহার প্রত্যেকে অনেক দেশকর্ম্মী যুবক দিগকে প্রলুব্ধ করিয়াছিল। আমিও সেই অপরাধ হইতে মুক্ত নহি। এমন কি কেহ কেহ পিতৃতুল্য দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের পারিষদদিগের প্রতিও কটাক্ষ হানিতে ছাড়ে নাই। বাড়ীতে ফিরিয়া আমরা এই আলোচনাই করিতাম, —কে কয়টা নূতন ‘বাবু’ জুটাইয়াছে— কার ঘরে কোন দেশকর্ম্মী আসিলেন— পরের টাকায় কেমন পান সিগারেট খাওয়া হইল— মোটর চড়া গেল— ট্যাক্সী ভাড়ার টাকা হইতে কে কত টাকা আঁচলে বাঁধিয়াছে, ইত্যাদি।

 আমার যে শুধু যুবকদের অধঃপাতে লইয়া গিয়াছি, তাহা নহে। গৃহস্থ ঘরের কন্যা ও বধুরাও আন্দোলনে যোগ দিয়া বাহিরে আসিয়াছিলেন। অবশ্য উহারা উদার, শিক্ষিত পরিবারেরই বৌঝি। সাধারণতঃ গোঁড়া হিন্দুরা তাঁহাদের অন্তঃপুরের স্ত্রীলোকদিগকে এ-ভাবে বাহিরে যাইতে দেন না। গৃহস্থ ঘরের যে সকল মহিলা