পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৮
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

আমাদের সাহস বাড়িয়াছিল। সুতরাং এই ব্যপারেও আমরা উাসীন রহিলাম না। আমাদের দল পূর্ব্ব হইতেই এক প্রকার গঠিত ছিল। তবে এবার উহাকে আরও বড় করিতে হইল। আমরা প্রস্তাব করিলাম, নিজেদের মধ্যে চাঁদা না তুলিয়া দল বাঁধিয়া গান গাহিয়া রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করিতে হইবে। তদনুসারে হাড়কাটা গলি, রামবাগান, সোনাগাছি, ফুলবাগান, চাঁপাতলা, আহিরীটোলা, জোড়াসাঁকো, সিঙ্গলা, কেরাণীবাগান প্রভৃতি বিভিন্ন পল্লীর পতিতাগণ পৃথক পৃথক দল গঠন করিয়া রাস্তায় ভিক্ষা করিতে বাহির হইল।

 সে এক অপূর্ব্ব দৃশ্য! কলিকাতায় অধিবাসীগণ স্তম্ভিত হইয়া গেল। এক এক দলে প্রায় ৫০/৬০ জন পতিতা নারী— তাহাদের পরিধানে গেরুয়া রংয়ের লালপাড় সাড়ী— এলো চুল পিঠের উপর ছড়ান— কপালে সিঁদুরের ফোঁটা—কণ্ঠে মধুর সঙ্গীত মনোহর চলনভঙ্গী, সঙ্গে করেকজন পুরুষ ক্লেরিয়নেট ও হারমনিয়ম বাজাইতেছে। অগ্রে অগ্রে দুইটি নারী একখানি শালুর নিশান ধরিয়া যায়, তাহাতে কোন্ পাড়ার পতিতা নারী সমিতি, তাহা লিখিত আছে। তাহার পশ্চাতে অপর দুই নারী একখানি কাপড় ধরিয়াছে, তাহাতে দাতাগণ টাকা, পয়সা নোট প্রভৃতি ফেলিয়া দিতেছে। আর দুইজন স্ত্রীলোক পুরাতন বস্ত্র সংগ্রহ করিতেছে।

 বেশ্যাদের মধ্যে অনেকেই যে খুব সুন্দরী তাহা নহে, তবে তাহারা সকলেই নিতান্ত কুৎসিং একথাও সত্য নয়। যাহা হউক, সাজিয়া বাহির হইলে পতিতা নারীদের সকলকেই সুন্দরী দেখায়। কারণ, ইহার উপরেই তাহাদের ব্যবসার ভিত্তি। রূপ দেখাইয়া