পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অগ্নি ক্রীড়া
১২৯

জনসাধারণকে প্রলুব্ধ করিবার জন্য কলিকাতার রাজপথে বেশ্যাদের দাঁড়াইবার নিয়ম নাই। তাহা হইলে তাহাদিশকে পুলিশে বাঁধিয়া নেয়। প্রলুব্ধ করিবার জন্য তাহারা তাহাদের দরজার চৌকাঠের বাহিরে আসিতে পারে না। সুতরাং, খাঁটি বেশ্যা পল্লীতেও তিন চারিটী স্ত্রীলােককে কদাচ রাস্তার উপরে এক সঙ্গে দেখা যায়। এমন অবস্থায় যদি বেশ্যারা দল বাঁধিয়া গান গাহিয়া রাস্তায় বাহির হইয়া চলিতে থাকে, তবে তাহা সাধারণ লােকের চক্ষে কেমন লাগে তাহা একবার ভাবিয়া দেখুন।

 আমি পূর্ব্বই বলিয়াছি, নিত্য অসংযম ও ভােগ লালসার মধ্যে থাকাতে পতিতা নারীদের চরিত্রে কুভাবই প্রবল থাকে। অসহযােগ আন্দোলনে দেশপ্রীতির ভাব, অথবা বন্যা-পীড়িতের সাহায্যে ভিক্ষা করার কার্য্যে দয়ার ভাব পতিতা নারীদের চিত্তকে বিশেষ অধিকার করে নাই। আমরা নিজেদের লোকের সম্মুখে জাহির করিবার একটা সুযােগ পাইয়া তাহার উপযুক্ত ব্যবস্থা করিয়াছি, এইমাত্র। সকলে না হউক অন্ততঃ অনেকে।

 আমরা যখন ভিক্ষা করিতে বাহির হইতাম তখন শত শত লোক আমাদের সঙ্গে সঙ্গে চলিত।

 বন্যা-পীড়িত দুর্দশাগ্রস্থ নরনারীর দুঃখে কাতর হইয়া সকলেই আমাদের তহবিলে টাকা দিত না; আমাদের রূপ দেখিয়া, আমাদের গান শুনিয়া, আমাদের কটাক্ষ খাইয়া, তাহারা মুগ্ধ হইয়া টাকা দিয়া যাইত। ছাত্র ও যুবকের দলে এত লােকের ভিড় হইত না।

 সকালে ও সন্ধ্যায় দুই বেলাই পতিতা নারীর দল অর্থ সংগ্রহ করিতে বাহির হইত। আমরা বহু সহস্র টাকা পাইয়াছিলাম, কিন্তু