পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অগ্নি ক্রীড়া
১৩৩

“এখনও তারে চোখে দেখিনি,
শুধু বঁশী শুনেছি।
মন প্রাণ যা’ ছিল তা’ দিয়ে ফেলেছি”।—

 বসন্তের কথায় আমার দিকে চাহিয়া বলিলেন, “অশ্বিনী বাবুর নাম শুনেন নি!— স্বনামধন্য পুরুষ অশ্বিনীকুমার দত্ত। আপনি এত পড়াশুনা করেছেন—তাঁর ভক্তিযােগ পড়েন নি?— একবার পড়ে দেখবেন। পবিত্র চরিত্রের এমন উচ্চ আদর্শ আর কোথাও নাই! অশ্বিনী বাবুর হাতে গড়া বরিশাল।” আমি বলিলাম “সেই অশ্বিনী কুমার দত্ত! হাঁ, তার নাম আমি জানি।”

 আমি তাঁর মুখের উপর জবাব দিলাম “আপনিও সেই বরিশালেরই যুবক—না?” যুবকটী নির্ল্লজ্জের মত পুনরায় গাহিতে লাগিল—

“শুধু স্বপনে এসেছিল যে,
নয়ন কোনে হেসেছিল সে”—

আমি বিরক্ত হইয়া উঠিয়া আসিলাম। আমার মনে হইল, মানুষ এই বড় ভণ্ড হইতে পারে— একটা মহান আদর্শকে প্রশংসা কর্‌বার সঙ্গে সঙ্গে নিজের কার্য্য দ্বারা অম্লান বদনে তাহাকে পদদলিত করিয়া যায়। যাহা হউক, বসন্তের প্রণয়ী এই যুবকটী আমাকে একদিন অশ্বিনী বাবুর 'ভক্তিযোগ' পুস্তকখানি আনিয়া দিলেন। বলিলেন, “ইহা আমার উপহারস্বরূপ গ্রহণ করুণ।” সেই অবধি আমি ভক্তিযােগ মাঝে মাঝে পাঠ করিতাম।

এই পতিতা-নারী-সমিতির প্রভাব ক্রমশঃ এতদূর বিস্তৃত হইল যে একদল সুনীতি-জ্ঞান-সম্পন্ন ব্যক্তি ইহার বিরুদ্ধে দণ্ডায়মান হইলেন। সঞ্জীবনী সম্পাদক শ্রীযুক্ত কৃষ্ণকুমার মিত্র প্রথমাবধি