পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

 স্নান করা আমার অতি আনন্দের বিষয় ছিল। মায়ের অনুরোধে বাবা আমার জন্য বাড়ীর উঠানে একটা বৃহৎ চৌবাচ্চা তৈয়ারী করাইয়াছিলেন। তার মধ্যস্থলে সুন্দর ফোয়ারায় জল উঠিত। ছয় সাত বৎসর বয়সে আমি সাঁতার শিখিয়াছিলাম। স্নান করিবার সময় আমার সমবয়সী প্রতিবেশী ছেলে মেয়েদের ডাকিয়া আনিতাম। আমরা সকলে চেঁচামেচি হুটোপাটি করিয়া সেই বৃহৎ চৌবাচ্চার জলে হাঁসের মত ঘণ্টার পর ঘণ্টা খেলায় মত্ত থাকিতাম। মা আমাকে অত্যন্ত আদর করিতেন, সেই জন্য বাবা আর কিছু বলিতেন না।

 আমার আর একটী অভ্যাস ছিল—প্রত্যহ বৈকালে বেড়াইতে বাহির হওয়া চাই। যে দিন বাবা বাহিরে যাইতেন না, সেদিন আমি মায়ের সঙ্গে মোটরে চড়িয়া যাইতাম। আমার এক মামাত ভাই আমাদের বাড়ীতে থাকিয়া স্কুলে পড়িত। তাহার নাম ছিল নন্দলাল, তাহাকে আমি নন্দ দাদা বলিয়া ডাকিতাম। তাহার সঙ্গে কখনও কখনও হাঁটিয়া বেড়াইতে যাইতাম। রাস্তার দুইধারে সুন্দর সুন্দর সাজান দোকানপাট, ট্রামগাড়ী, আলোকমালা, অসংখ্য লোক চলাচল, সেসব দেখিয়া আমার মনে কি আনন্দ হইত! আলিপুরের চিড়িয়াখানা, চৌরঙ্গীর যাদুঘর, হাবড়ার পুল, পরেশনাথের বাগান, কালীঘাটের মন্দির এসকল আমি বালিকা বয়সেই অনেকবার দেখিয়াছি।

 পুতুলখেলা অপেক্ষা পাখী পুষিবার সখই আমার ছিল বেশী। পায়রা, ময়না, টীয়াপাখী, কাকাতুয়া, হীরেমন, শালিক প্রভৃতি নানাপ্রকার সুন্দর পাখী বাবা আমাকে আনিয়া দিতেন। কুকুর