পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪২
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

উভয়েই পতিতাবৃত্তি অবলম্বন করিয়া শােভাবাজারে বাস করে। গভর্ণমেণ্টের একজন উকীল সুকৃতির ঘরে যাতায়াত করিয়া থাকেন। কিছুকাল পূর্ব্বে সাবিত্রীর মৃত্যু হইয়াছে। একজন বড় দেশকর্ম্মী তাহার কাছে যাইত। যে সকল পরিবার বাংলার গৌরব, তাহাদেরও আজ এ কি অধঃপতন! ইহার নিকট বাংলার বহু বিখ্যাত ব্যক্তির যে ইতিহাস শুনিয়াছি, তাহা লিখিলে হয়ত আইনের দায়ে পড়িতে হবে— এজন্য লিখিলাম না। এই পরিবারই অবাধ মেলামেশার পথ প্রদর্শক।

 উপেন বাবুর নিকট শুনিয়াছি, নন্দদার সংযম অটুট রহিয়াছে। কোন নারী তাহার সম্মুখে প্রলােভন লইয়া আসিতে পারে নাই। অসহযোগ আন্দোলনের ভাল দিক্‌টা তাহার পূর্ব্ব গঠিত চরিত্রকে আরও সুদৃঢ় করিয়া তুলিয়াছে। বিলাস শূন্যতা ও সৎকার্য্যে আসক্তি এই দুইটী তাহার ব্রহ্মচর্যোর প্রধান সহায়। আমার মত সাহিত্য চর্চ্চা না করা নন্দদার পক্ষে মঙ্গলজনক হইয়াছে। দারিদ্র্য তাহার বন্ধুর কার্য্য করিয়াছে। এমন নির্ম্মল চরিত্রের কর্ম্মীও আছে, কিন্তু তাহাদের সংখ্যা অল্প।

 আমার সম্বন্ধে নন্দদাদা নাকি এই কথা বলিত “মানদা যদি তার পাপজীবনের সমস্ত ঐশ্বর্য্য ছেড়ে এক বস্ত্রে আমার কাছে আসে, আমি তা'কে আদরের সহিত মাথার মণি করে রাখব—বােন বলে তেমনি স্নেহ ক'রব। কিন্তু সে পতিতাপল্লীতে পতিতাবৃত্তিতে থাকিলে আমি তাহার সঙ্গে কোন সম্বন্ধ রাখ্তে পারি না।”

 আমি কখনও সিগারেট অথবা মদ খাই নাই। পতিতা নারীদের এই অভ্যাস অর্থোপার্জনের অনুকূল নহে। আমার বাবুগুলি আমাকে এই নেশা দুইটা ধরাইবার জন্য চেষ্টা করিয়াছিছেন কিন্তু