পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৬
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

হয়। পিসশাশুড়ী প্রকাশ করেন যে, বধূরা নিজের দেহে আগুণ লাগাইয়া আত্মহত্যা করিয়াছে। অপরাজিতা তাহার স্বামীর তৃতীয় পক্ষের স্ত্রী— তাহার একটি শিশুপুত্র আছে।

 অপরাজিতাকেও তাহার পিসশাশুড়ী পাপ পথে অর্থ উপার্জ্জন করিতে নিযুক্ত করেন, অপরাজিতা তাহাতে সম্মত নহে। ইহাতে পিসশাশুড়ী তাহার উপর দিনরাত্রি উৎপীড়ন করিতেন! এক দুষ্ট ডাক্তার পিসশাশুড়ীর প্রধান মন্ত্রণাদাতা ও দুষ্কার্য্যের সহায় ছিল। অপরাজিতা এতদিন তাহার সতীত্ব রক্ষা করিয়া আসিয়াছে।

 আমি অপরাজিতাকে জিজ্ঞাসা করিলাম, “তুমি এখন কি করবে?—তুমিও কি আত্মহত্যা করতে চাও?” অপরাজিতা বলিল, “আত্মহত্যা করব কেন? — আমার বাবা আছেন— ভাই আছেন— আমার ছেলে আছে— আমি আত্মহত্যা করব না। তবে ঐ লম্পটের হাতে আমি সতীত্ব কিছুতেই দিব না, আমার প্রাণ যায়, তাও স্বীকার।” আমি এই কিশোরী বধূর দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ও অপূর্ব্ব আত্ম-সংযম দেখিয়া বিস্ময়ে স্তম্ভিত হইলাম। এই বালিকা কোন শিক্ষা পায় নাই— লেখাপড়া জানে না, সাহিত্য-চর্চ্চা করে নাই, অথচ ইহার মধ্যে এমন তেজ ও শক্তি কোথা হইতে আসিল?

 আমি বলিলাম “তুমি যদি ইহাদের কুপ্রস্তাবে সম্মত না হও, তবে কি হবে তা জান?” অপরাজিতা বলিল, “হাঁ জানি। এরা আমাকে মেরে ফেলবে। আমার পিসশাশুড়ী আমার ঐ দুই সতীনকেও মেরে ফেলেছেন, তারপর লোকের কাছে বলেছেন যে,