পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঙ্কিল আবর্ত্তে
১৪৭

উহারা কাপড়ে কেরোসিন তেল দিয়ে আগুন লাগিয়ে মরেছে। কিন্তু মানুষ এত বোকা নয় যে, সে কথা আর বিশ্বাস করবে; পর পর দুইটী বৌ একই রকমে মারা যায়। আজ সারাদিন পিশাশুড়ীর সহিত আমার ঝগড়া হয়েছে। আমি বলেছিলাম যে, আমি সমস্ত কথা প্রকাশ করে দিব। শাশুড়ী আমাকে বলেন তাহ’লে তোর গলায় পা দিয়ে একেবারে তোর জীবন শেষ করব! “আমিও সেই থেকে প্রতিজ্ঞা করেছি, এরা জীবিত অবস্থায় যেন আমার অঙ্গ স্পর্শ করতে না পারে।”

 অপরাজিতার কথা শুনিতে শুনিতে আমার মাথা লজ্জায় নুইয়া পড়িল। ভাবিলাম, অপরাজিতা কোন স্বর্গের দেবী— আর আমি কোন নরকের কীট! হিন্দু সমাজে কেবল আমার মত কলঙ্কিনীই জন্মগ্রহণ করে না, অপরাজিতার মত সতীও জন্মগ্রহণ করেন। আমার দেহের দূষিত বাতাসে অপরাজিতার পবিত্রতা নষ্ট হইয়া যাইবে— এই ভাবিয়া তাহার সহিত আর অধিকক্ষণ কথা কহিলাম না। দেখিলাম, তাহার পিশাশুড়ী ও আর একজন লোক (অপরাজিতা বলিল, লোকটী নাকি...... ডাক্তার) সেইদিকে আসিতেছেন। আমি অপরাজিতার পায়ের ধূলা নিয়ে তাহাকে প্রণাম করিলাম। সে অগ্রসর হইয়া গেল— আমি একটা লতাকুঞ্জের অন্তরালে দাঁড়াইলাম!

 সে রাত্রিতে আমি আর অমোদ প্রমোদে যোগ দিলাম না। শরীর অসুস্থ বলিয়া শীঘ্র চলিয়া আসিলাম। দুঃস্বপ্নে ভাল ঘুম হইল না। দুইদিন পরে খবরের কাগজে পড়িলাম, অপরাজিতার মৃত্যু হইয়াছে। তাহার পিসশাশুড়ী পুলিশের নিকট