পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৮
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত
১৪৮

জানাইয়াছেন, সকালবেলা উনুনে আঁচ ধরাইবার সময় অসাবধানে কাপড়ে আগুন লাগিয়া অপরাজিতার মৃত্যু ঘটে। শবদেহের ডাক্তারী পরীক্ষায়, পুলিশ তদন্তে ও করোণারের বিচারে প্রকৃত রহস্য প্রকাশিত হইল না। এই ঘটনার পর প্রায় সপ্তাহ কাল পর্যন্ত আমি নিতান্ত মানসিক উদ্বেগ ও অশান্তিতে কাটাইয়াছি। এখনও অপরাজিতার মুখখানি আমার মনে আছে।

 এদেশের ঘরে ঘরে এমন কত শোচনীয় দুর্ঘটনা হইতেছে, সে সংবাদ কি সমাজের কর্ত্তারা রাখিয়া থাকেন?— সতী-শিরোমণি বালিকাবধূর অভিশাপে সমাজ রসাতলে যাইতেছে। দুর্বৃত্ত লম্পটেরা অর্থের বলে মান মর্য্যাদা আদায় করিয়া সমাজের মধ্যে নির্ভয়ে বুক ফুলাইয়া বেড়ায়।

 কালীদাসী একদিন আমার বাড়ীতে আসিল; তাঁহার চেহারা দেখিয়া বুঝিলাম, সে অতিশয় দুরবস্থায় পড়িয়াছে। তাহার মুখে শুনিলাম, রেস্ (ঘোড়-দৌড়ের জুয়াখেলা) খেলিয়া এবং মদ খাইয়া তাহার সেই ভাটিয়া বাবু সর্বস্বান্ত হইয়াছে। তাহার কারবার উঠিয়া গিয়াছে। কালীদাসী এখন এক মাড়োয়ারীর কাছে বাঁধা। কিন্তু হাতে টাকাকড়ি নাই। আমার কাছে গহনা বন্ধক রাখিয়া পাঁচশত টাকা কর্জ্জ চায়।

 যাহারা পতিতালয়ে যাতায়াত করে, তাহাদের মধ্যে অধিকাংশ লোকের দুইটী প্রধান নেশা জন্মে— ঘোড়দৌড়ের জুয়াখেল এবং মদ্যপান। রেস্ খেলিয়া অনেকে হাজার হাজার টাকা পায়— এইরূপ শুনা যায়— কিন্তু তাহা থাকে না; পথে উৎপত্তি, সেই পথেই নিষ্পত্তি। রেসের দিন বেশ্যা