পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঙ্কিল আবর্ত্তে
১৪৯

পল্লীতে খুব ভিড়। যে খেলায় জিতিয়া কিছু লাভ করিয়াছে, সে যেমন আমোদ করিতে সেখানে যায় যে হারিয়া সমস্ত খোয়াইয়াছে সেও তেমন দুঃখ ভুলিতে সেখানে ছুটিয়া যায়।

 আমার হাতে টাকা ছিল না। ঊষাবালা নামে একটি স্ত্রীলোক আমাদের বাড়ীতে নূতন আসিয়াছিল, তাহার কাছে কিছু নগদ টাকা আছে জানিতাম। কালীদাসী যে গহনা আনিয়াছিল, তাহার মূল্য প্রায় এক হাজার টাকা। সুতরাং আমার কথায় সম্মত হইয়া ঊষাবলা ঐ গহনা বন্ধক রাখিয়া কালীদাসীকে পাঁচ শত টাকা দিল।

 আমি পরে জানিয়াছি, কালীদাসী রেস্ খেলিয়া ও মদ খাইয়া সে টাকাও উড়াইয়াছে। ভাটিয়া বাবুর সংসর্গে কালীদাসীকে রেস ও মদের নেশায় পাইয়াছিল। এই পথেই সে উচ্ছন্ন গিয়াছে। আমি আরও জানিলাম, এই নূতন মাড়োয়ারী যুবকটীর সহিত কালীদাসার পূর্ব্ব হইতেই গুপ্ত-প্রণয় ছিল। এইসব দেখিয়া শুনিয়া তাহার প্রতি আমার আর বিন্দুমাত্র সহানুভুতি রহিল না। ঊষাবালার ঋণ সে পরিশোধ করিতে পারে নাই।

 কালীদাসী এখনও বাঁচিয়া আছে। সে আমারই মত তাহার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করিতেছে। কিছুদিন পূর্ব্বে তাহাকে কলিকাতার কোন অপরিচ্ছন্ন বস্ত্রীতে এক বিড়ীওয়ালা মুসলমান যুবকের সহিত যেভাবে ইয়ারকি করিতে দেখিলাম— তাঁহাতে বুঝিতে পারিয়াছি; পতিতাদের শীঘ্র মরণ হয় কেন। সেই ২৬ বৎসরের যুবতীর দেহ ৬০ বৎসরের বৃদ্ধের মত ক্ষীণ শুষ্ক, অস্তি-চর্ম্মসার; মদ্যপানের ফলে নানারোগের আক্রমণ,