পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৮
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

যখন পার্কে হাত ধরাধরি করিয়া ভগিনীপতি ব্যারিষ্টারের সঙ্গে সান্ধ্য-সমীরণ উপভােগ করিতাম, যখন একটিমাত্র কটাক্ষে অপরিচিতকে পরিচিতের পর্য্যায়ভূক্ত করিয়া বাটিতে আনিয়া স্বহস্তে পরিপাটিরূপে চা পান করাইয়া পরিতৃপ্ত করিতাম ও সঙ্গলিপ্সার দুর্দ্দম্য বেগ তাঁহাদের হৃদয়ে সৃষ্টি করিয়া পরম তৃপ্তিলাভ করিতাম; যেন আমার হৃদয়ের সে আবিল স্বার্থদুষ্ট রূপ কাহারও নয়নপথে পড়িত না, বরং উর্ণনাভের বিস্তৃত জালে তাঁহারা আবদ্ধ হইয়া আমার সহিত নিভৃত আলাপের অনুসন্ধান করিতেন। অবশ্য বলিতে হইবে আমিও কাহাকেও ..............। যাঁহার যখন উদয় হইত তিনিই যে আমার হৃদয় কমলের একমাত্র ভৃঙ্গ এবং অন্য সকলকেই মরিচীকা লইয়া ফিরিতে হইবে তাহাও বুঝাইয়া দিতাম।

 কত সতীত্বের ভানই করিয়াছি, আজ তাহা স্মরণ করিলেও হাস্য সম্বরণ করিতে পারি না। একদিন সন্ধ্যার সময় সম্মুখে টিপয়ের একদিকে মিঃ গোস্বামী ও অপর দিকে প্রফেসর চৌধুরী। উভয়েই ধনী, উভয়েই সুপুরুষ। আমি হারমােনিয়মটি অঙ্কে স্থাপন করিয়া বেশভূষার পারিপাট্যের পরিবর্ত্তে ইচ্ছাকৃত একটু অযত্নের ভাবে উন্মাদনা বৃদ্ধি করিয়া গান ধরিয়াছিলাম—

আজি অভিসার রজনী!

কোথা সে আমার কতদূরে তার দেখা পাব বল সজনি!

প্রেমের কমল ফুটেছিল তারই আলােক রেখার পরশে

দিন দিন করি বিতানু জীবন তাহারই পাবার হরষে।

মিঃ গােস্বামী বলিলেন— এখন বলুনতাে কে সে এই ভাগ্যবান!