পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

 কি কারণে জানি না, আমার পুরাতন গৃহ-শিক্ষককে ছাড়াইয়া দেওয়া হইল। বাবা আমাকে বলিলেন “তুমি এখন উপরের ক্লাসে পড়্‌ছ, পুরাণো মাষ্টারের বিদ্যা ত বেশী নয়; আজ কালকার স্কুল কলেজের শিক্ষাপ্রণালীর সহিত পরিচিত লোক না হলে চলেনা।” কয়েকদিন পরে আমার জন্য নূতন মাষ্টার আসিলেন। ইহার একটু পরিচয় দেওয়া আবশ্যক।

 প্রথম যেদিন তিনি পড়াইতে আসিলেন, সেইদিনই তাঁহার আকৃতি প্রকৃতি ও পরিচ্ছদে আমি একটু আকৃষ্ট হইলাম। তাঁহার লম্বা লম্বা চুল কপাল হইতে উল্টা দিকে আঁচড়ান এবং ঘাড়ের কাছে ঝাঁক্‌ড়া ঝাঁক্‌ড়া বাবড়ী পাকান―তাঁহার বয়স আন্দাজ বাইশ তেইশ―দাড়ী গোঁপ উঠে নাই―না পরিস্কার কামানো তাহা বুঝিতে পারিলাম না। কাপড় ঢিলা মালকোঁচা দিয়া পরিয়াছেন, মনে হয় যেন কাবুলীদের পা-জামা। গায়ে একটা পরিষ্কার ধবধবে সাদা পাঞ্জাবী জামা―তখনও খদ্দরের চলন হয় নাই। তাঁহার সূক্ষ্মাগ্র উন্নত নাসিকা―চোখ দুটী সুন্দর―কিন্তু একজোড়া সোণার ফ্রেমে বাঁধান চশমা সেই সৌন্দর্য্যকে অন্য রূপ দিয়াছে। পায়ে নকল জরীর কাজ করা নাগরা জুতা। তাঁহার বর্ণ উজ্জ্বল শ্যাম―দেহ অপেক্ষাকৃত ক্ষীণ। তাঁহার কথায় যেন বাঁশী বাজে। তিনি সম্প্রতি বি, এ পাশ করিয়া কোন স্কুলে শিক্ষকের কার্য্য করিতেছেন। মাষ্টার মহাশয় অবিবাহিত।

 তাঁহার নিকট আমার পড়াশুনা ভালই হইতে লাগিল। তিনি গণিত শাস্ত্র বিশেষ জানিতেন না―তবে সাহিত্য, ইতিহাস বিশেষতঃ কাব্য তিনি অতি চমৎকার পড়াইতেন। সকালে বিকালে