পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

 আমার ত্রয়োদশ জন্মতিথির পূর্ব্ব দিন বাবা আমাকে ডাকিয়া বলিলেন “খুকু, তোমার মাষ্টার মহাশয় ও রমেশদাকে নিমন্ত্রণ করো।” জন্মদিনের উৎসব করিতে আমার আর ভাল লাগিত না। তথাপি কোন প্রকারে দিনটা চলিয়া গেল। বিমাতা আমাকে একছড়া সোণার হার উপহার দিলেন। রমেশ দাদার নিকট হইতে একটা রূপার সুদৃশ্য পাউডার কৌটা উপহার আসিল। মাষ্টার মহাশয় বোধ হয় দিয়াছিলেন একখানা রবীন্দ্রনাথের কাব্য।

 আমি ছোটগল্প ও কবিতা লিখিতে শিখিয়াছিলাম। রমেশ দাদা তাহা পড়িয়া খুব প্রশংসা করিলেন। তিনি বলিলেন “মুকুলকে দিয়ে মাসিক কাগজে এগুলো ছাপিয়ে দাও।―এ ত বেশ সুন্দর হয়েছে। আজকাল মেয়েদের কি রাবিস্ লেখা বের হয়!”

 আজকাল রমেশ দাদাও আমাদের সঙ্গে থিয়েটারে যাইতেন। নন্দদাদা এখন ফুটবল ও ক্রিকেট খেলায় মাতিয়াছিল, সে আর বড় একটা যাইত না। বিশেষতঃ সে বেচারা নাটকের সাহিত্যের দিকটা কিছুই বুঝিত না এবং অভিনয়ের মধ্যে যে আর্ট আছে, তাহাও তার উপলব্ধি হইত না। ষ্টেজের উপরে যুদ্ধ-বিগ্রহ, নাচ-গান—সাজপোষাক এসব জমকালো রকমের হইলেই সে খুসী হইত।

 তখন থিয়েটারে একটা পরিবর্তন আসিতেছিল। শিক্ষিত সম্প্রদায়ের ভদ্র যুবকেরা থিয়েটারে যোগ দিয়া তাহার মধ্যে শিল্প-কলার বিকাশ করিতে অগ্রসর হইলেন। রমেশ-দা ও মুমুল-দা এই অভিনব আর্টিষ্টদের মর্য্যাদা বুঝিতেন এবং তাহাদের খুব প্রশংসা করিতেন। রমেশদার নিকট অনেক অভিনেতা, অভিনেত্রীদের নাম ও পরিচয় আমি জানিলাম। এমন কি তাহাদের