পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পলায়ন
৪১

শুধু রূপে নহে, গুণেও কমলা আমার চিত্তকে মুগ্ধ করিয়াছিল। তাহার ভালবাসা ও সহানুভূতি আমি চিরদিন সমভাবে পাইয়াছি। আমোদ-প্রমোদে, গান-বাজনায়, হাস্য-পরিহাসে, খেলা-ধূলায়, লেখা-পড়ায় সকল বিষয়ে তাহার সমান অধিকার ছিল। স্কুলের প্রাইজ্‌ ডিষ্ট্রীবিউসন (পুরস্কার বিতরণ) অথবা অন্য কোন উৎসবের আয়োজনে কমলার সাহায্য না লইলে চলিত না। সে মেয়েদের গান ও অভিনয় শিখাইত।

 একবার কোন বালিকা বিদ্যালয়ের গৃহ নির্ম্মাণের জন্য অর্থ সংগ্রহ চেষ্টায় ইউনিভারসিটি ইন্‌ষ্টিটিউটে নানাবিধ আমোদ প্রমোদের ব্যবস্থা হয়। আমার রমেশ-দা তাহাতে একজন প্রধান উদ্যোগী ছিলেন। সেই উপলক্ষে বোধ হয় বেথুন, ডায়োসিসান, প্রভৃতি বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা মিলিয়া নবীন সেনের ‘কুরুক্ষেত্র' কাব্য হইতে নির্ব্বাচিত দৃশ্যের অভিনয় করে। তাহাতে আমি ‘শৈলজার’ অংশ লইয়াছিলাম, কমলা নিজে ‘জরুৎকার’ সাজিয়াছিল। আমাদের অভিনয় দেখিয়া দর্শকগণ চমৎকৃত হইয়াছিলেন। শৈলজার দু’টী গান আমার মাষ্টার মহাশয় রচনা করিয়া দিয়াছিলেন। কমলা তাহাতে সুর যোজনা করিয়া আমাকে শিখাইয়াছিল। অর্জ্জুনের প্রেমলাভে নিরাশ শৈলজার অন্তরের ব্যাথা সেই গানে ফুটিয়া বাহির হইয়াছিল। সেই গান এখনও মাঝে মাঝে গাহিয়া আমি শান্তি পাই।

 কমলা বৈদ্য বংশের মেয়ে। কলিকাতায় বাগ্‌বাজারে একখানা সাধারণ দোতালা বাড়ীতে সে তাহার মাতার সহিত বাস করিত। কমলার পিতা কার্য্যোপলক্ষে নানাস্থানে ঘুড়িয়া বেড়াইতেন। মাঝে