পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পলায়ন
৪৫

ভালবাস্‌বে বলছ, কিন্তু আমি তোমার মত মহৎ নই―আমি ক্ষুদ্রাদপি ক্ষুদ্র―স্রোতে ভাসিয়া চলিলাম, জানিনা কোথায়।”

 কমলার এই পত্রেরও উত্তর আসিয়াছিল। তাহাতে তাহার স্বামী লিখিয়াছিলেন “কমল আমার অপরাধ বুঝেছি। প্রায়শ্চিত্তের দিন এলে মাথা পেতে শাস্তি গ্রহণ করব। তখন যেখানেই থাক হতভাগ্যকে একবার মনে করো।” বুঝিলাম কমলার স্বামীর প্রাণ আছে। সে যথার্থ দরদী, কিন্তু অবস্থার দাস। সমাজের কৃত্রিমতার আঘাতে এমন কত হৃদয় স্বভাবের পথে পরিচালিত হইতে পারে না। সমাজ-বিধি এমনি করিয়া মানব জীবনের পরিস্ফূর্ত্তির পথে অন্তরায় হয়।

 কমলার মায়ের সম্বন্ধে যে কলঙ্কের কথা রটিয়াছিল, তাহা কতদূর সত্য আমি তাহার অনুসন্ধান করি নাই। পদ্মফুলের মূল থাকে কাদায়―সূর্য্য তাহার খোঁজ রাখে না। সে জলের উপরে ফুলটীকে ফুটাইয়া সুখী হয়―বাতাস তাহাকে দোলায়―ভ্রমর তার মধুপান করে।

 কমলা আমাদের বাড়ীতে প্রায়ই আসিত। আমার পিতাও তাহাকে স্নেহ করিতেন। মাষ্টার মহাশয়, আমি, কমলা ও রমেশ দাদা মাঝে মাঝে মোটরে বেড়াইতে যাইতাম। কমলাদের বাড়ীতে আমাদের চা-পার্টির নিমন্ত্রণ হইত। কমলার মাতা ধনীর গৃহিণী না হইলেও আমাদের আদর যত্নের ত্রুটী হইত না। তিনি স্বহস্তে সমস্ত খাবার প্রস্তুত করিতেন।

 আমি যে সকলের সঙ্গে এরূপ অবাধ মেলা মেশা করিতাম,