পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

ইহাতে পিতার কোন আপত্তি ছিলনা। পূর্ব্বেই বলিয়াছি, তিনি সামাজিক ব্যাপারে উদার মত পোষণ করিতেন। আমাদের বাড়ীর পশ্চাতে খানিকটা মাঠের মত জায়গা ছিল। আমি বাবাকে বলিয়া সেখানে একটী টেনিস্-কোর্ট্‌ তৈয়ারী করাইলাম। নন্দ-দাদা এ-বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগী হইল। রমেশ-দা, মুকুল-দা, কমলা, আমি, নন্দলাল এবং আরও কয়েক জন বন্ধু বৈকালে এই মাঠে টেনিস্ খেলিতাম। মুকুল-দা খেলা কিছুই জানিতেন না―তাঁহাকে অনেক ধরিয়া বাঁধিয়া শিখাইয়া লইলাম। কমলা খেলায় খুব নিপুণ ছিল। সে সর্ব্বদাই আমার প্রতিদ্বন্দ্বী থাকিত। রমেশ-দা ও মুকুল-দা কখনও আমার পক্ষে কখনও কমলার পক্ষে খেলা করিত।

 বিমাতা আমাদের সংসারে আসিবার সময় পিত্রালয় হইতে একটী দাসী আনিয়াছিলেন। তাহার নাম ছিল হরিমতি। তাহাকে ঝিয়ের কাজকর্ম কিছুই করিতে হইত না। সে ছিল অনেকটা আমার বিমাতার পার্সন্যাল এসিষ্ট্যাণ্ট বা প্রাইভেট্ সেক্রেটারী। তাহার বয়স প্রায় ৪৫।৪৬ হইবে। বোধ হয়, সে বিধবা―থান কাপড় পরিত, হাতে নোয়া ও সিঁথিতে সিন্দুর দিত না, তাহার গলায় একছড়া সরু বিছাহার ও হাতে চারিগাছি সোণার চূড়ি ছিল। সে একাদশীর উপবাস করিত, মাথায় গন্ধ তেল মাখিত ও চব্বিশ ঘণ্টা দোক্তা দেওয়া পান চিবাইত। চাকর বেচারেদের উপর যে তা’র কটাক্ষপাত না হইত এমন নহে।

 বাড়ীর এক নিভৃত কোণে হরিমতি তার শোবার ঘর ঠিক্ করিয়াছিল। উহা সে প্রয়োজন মত সাবধানে তালাচাবি দিয়া বন্ধ করিয়া রাখিত। দুপুর বেলা সে ঐ ঘরে যাইয়া ঘুমাইত। তার