পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পলায়ন
৪৯

বাবা বলিলেন উপরে আছে―কেন?” রমেশদা বলিলেন “আজ আমরা বোটানিক্যাল গার্ডেনে বেড়াতে যাব, মানী যদি যায়, তবে কাকীমাকে শুদ্ধ নিয়ে যাব।” বাবা বলিলেন “যাও জিজ্ঞেস্ করে এস।”

 রমেশ-দা একবারে আমার শোবার ঘরে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। আমি, অর্দ্ধ শয়ান অবস্থায় গীতগোবিন্দের একটা কবিতা পড়িতেছিলাম। তিনি পালঙ্কের উপরে আমার পাশে বসিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “মানী আজ বোটানিক্যাল গার্ডেনে যাবে?―চল।” আমি বলিলাম, “না রমেশদা, আজ শরীরটা ভাল নয়।” রমেশদা আমার কপালে হাত দিয়া কহিলেন “কৈ, কিছুইত নয়! দেখি হাত!” তিনি আমার বাম হাত খানি টানিয়া নাড়ী টিপিয়া বলিলেন “কিছুনা―তোমার সব চালাকী!” তিনি আমার আঙ্গুলের ফাঁকে ফাঁকে তাঁহার আঙ্গুলগুলি প্রবেশ করাইয়া পাঞ্জা ধরার মত আমার হাত টিপিতে লাগিলেন। আমার সমস্ত দেহে বিদ্যুৎ-তরঙ্গের মত এক অপূর্ব্ব পুলকের সঞ্চার হইতেছিল।  আমি কাত হইয়া ফিরিয়া শুইলাম। একটু মুচ্‌কি হাসিয়া বলিলাম, “নাড়ী টিপিয়া আর কপালে হাত দিয়াই বুঝি সব ব্যারাম ধরা যায়।” রমেশ-দা এই পরিহাসের অর্থ বুঝিয়া বলিলেন “তবে আমাকে বিনা ষ্টেথিস্‌কোপেই পরীক্ষা কর্‌তে হয়।”

* * * * 

 কিছুক্ষণ পরে রমেশ-দা বাহির হইয়া গেলেন। হিংস্র ব্যাঘ্র যেমন রক্তের স্বাদে উন্মত্ত হয়, আমিও তেমনি হইলাম।