পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

আমার মনে কিছুমাত্র ভয় বা অনুতাপ আসিল না। বরং আশঙ্কা ও সঙ্কোচ কাটিয়া গেল। বুঝিলাম ইচ্ছা থাকিলে সুযোগের অভাব হয় না।

 ছয় সাত মাস চলিয়া যায়। আমি প্রবৃত্তির অনলে ইন্ধন দিতেছি। রমেশ-দা তখনও বোর্ডিংএ থাকেন। নানা অছিলা দেখাইয়া পরিবার আনেন নাই। মুকুলদা কমলার প্রতি আসক্ত হইয়াছিলেন। তিনি ব্রাহ্ম মতে কমলাকে বিবাহ করিতে সম্মত, এইরূপ ভাবও দেখাইয়াছেন। আমি তাহাতে সন্তুষ্ট হইলাম। কমলা কিন্তু তখনও দূরে দূরে―সে তার পূর্ব্বের স্বামীকে এত শীঘ্র ভুলিতে পারে নাই।

 একদিন রমেশ-দা আমার নিকট প্রস্তাব করিল, আর ত এ বাড়ীতে হ’তে পারে না। এমন স্থানে চল, যেখানে নিত্য তোমায় দেখ্‌ব―প্রতিমুহুর্ত্তে তোমায় প্রাণের কাছে রাখতে পারব। পাথরের পাহাড় চুরমার করে যখন নদীপ্রবাহ একবার বেরিয়েছে, তখন চল একবারে মুক্তপ্রান্তরে যেয়ে পড়ি। আমি কোন উত্তর না দিয়া রমেশ-দার গলা জড়াইয়া তাঁর বুকে মাথা লুকাইয়া কাঁদিয়া ফেলিলাম।

 আমাদের বার্ষিক পরীক্ষা নিকটবর্ত্তী হইয়াছিল। বাড়ীতে সকালবেলা অধিকক্ষণ পড়িবার জন্য আমি বাবাকে বলিয়াছিলাম যে এখন স্কুলের গাড়ী প্রথম ট্রিপেই নয়টার সময় আমাকে নিতে আসে; অথচ ক্লাস বসে সাড়ে দশটায়। বহু সময় আমার বৃথা নষ্ট হয়। বাবা বলিলেন, “বাড়ীর মোটরত মেরামত কর্‌তে দেওয়া হয়েছে। যতদিন না আসে ততদিন ট্যাক্সি করে যেও।