পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পলায়ন
৫১

নন্দলাল আর তুমি এক সঙ্গে যাবে। আগে তোমাকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে তারপর নন্দকে দিয়ে আসবে। পরদিন হইতে আমি ও নন্দ-দা টাক্সিতে স্কুলে যাইতাম। আসিবার সময় নন্দলাল আগে টাক্সি করিয়া আসিত। আমি তাহার জন্য স্কুলে অপেক্ষা করিতাম।

 দুই তিন দিন যাবৎ আমার মাঝে মাঝে বমি হইতেছে। মুখ দিয়া কেবল থুতু উঠে। রমেশদা শুনিয়া একটু স্তব্ধ হইলেন। পরদিন তিনি আসিয়া বলিলেন “মানী, আমি চার মাচের ছুটী নিয়েছি। চল পশ্চিমে যাই। আর বেশী দেরী করোনা। কাল স্কুলে যাবার সময় নন্দকে আগে নামিয়ে দিয়ে তুমি ট্যাক্সি নিয়ে একেবারে আমার বাসায় যেও। আমি সব জিনিষ পত্র গুছিয়ে ঠিক করে রাখব। যা যা কেনবার প্রয়োজন, মুকুলকে টাকা দিয়েছি।” আমার প্রাণ আনন্দে অধীর হইল।

 মুকুলদা নিয়মিত সময়ে পড়াইতে আসিতেন। আমার সহিত রমেশ-দার প্রণয়ের কথ। মুকুলদার নিকট গোপন ছিল না। এই উপলক্ষে তাঁর কত নূতন কবিতা রচিত হইয়া গেল——‘মাধুরী’ নামে আর একখানি কাব্যগ্রন্থ লেখা হইল

 পরদিন যথাসময়ে আমি ও নন্দ-দা ট্যাক্সি চড়িয়া স্কুলে রওয়ানা হইলাম। আমি পুস্তক অথবা খাতা কিছুই নিলাম না। নন্দদাকে বুঝাইলাম, “এখন পরীক্ষার জন্য আমাদের পুরানো পড়া রিভাইজ্ হচ্ছে, বই নিয়ে কি হবে!” গাড়ীতে উঠিয়া নন্দ-দা তাহার রিষ্ট ওয়াচের দিকে চাহিয়া বলিল, “ওঃ—মানু আমার বড্ড দেরী হয়ে গেছে।” আমি বলিলাম “তাহলে নন্দদা, তুমি আগে নেমে যাও,