পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

আমার একটু পরে গেলেও ক্ষতি নাই!” এমনি করিয়াই অপ্রত্যাশিত সুযোগ আসিয়া জোটে। আমি ভাবিতেছিলাম নন্দদাকে কি বলিয়া আগে নামাইবার ব্যবস্থা করি। সাধুর সৎকার্য্যের বুদ্ধি যিনি প্রেরণ করেন, চোরের মাথায় ফিকির ফন্দিও তিনিই যোগান।

 নন্দ-দাকে তাহার স্কুলে নামাইয়া দিয়া আমি একেবারে সোজাসুজি রমেশদার বাসায় উপস্থিত। দেখিলাম সেখানে মুকুল-দাও রয়েছেন। রমেশ-দা একটা সুটকেশ লইয়া আমার সহিত অন্য এক ট্যাক্সিতে উঠিলেন। মুকুল-দার নিকট এইখানেই বিদায় নিলাম। তাড়াতাড়িতে কমলাকে কিছুই জানান হয় নাই। মুকুল-দাকে বলিলাম, তিনি যেন কমলাকে সকল বিষয় খুলিয়া বলেন। ট্যাক্সী হাওড়া স্টেশনের দিকে অগ্রসর হইল। পশ্চাতে চাহিয়া দেখিলাম, মুকুল-দা রুমালে চক্ষুর জল মুছিতেছেন।

 বাড়ী হইতে বাহির হইবার পূর্ব্বে একবার মনে হইয়াছিল, যাইবার সময় মায়ের ছবিখানিকে প্রণাম করিয়া যাইব। কিন্তু মানসিক উদ্বেগে সে কথা ভুলিয়া গেলাম। ভালই হইয়াছে বলিতে হইবে, কারণ মায়ের ছবির প্রতি দৃষ্টি পড়িলে বোধ হয়, এতবড় জঘন্য দুঃসাহসের কার্য্য করিতে পারিতাম না।

 আমরা একটা লোকাল ট্রেণে বর্দ্ধমান যাইয়া কিছুক্ষণ থামিলাম। তার পর সন্ধ্যায় লাহোর এক্সপ্রেসে একেবারে দিল্লী অভিমুখে যাত্রা করিলাম।