পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

আমাদের জীবন ভোগের পূজা, তাহার প্রধান উপকরণ কাঞ্চন।

 দিল্লীতে এক সপ্তাহ কাটিয়া গেল; মুকুলদার পত্রে জানিলাম বাবা আমার জন্য খুব অনুসন্ধান করিতেছেন; কিন্তু পুলিশে এজেহার দেন নাই। রমেশ-দার উপর ঘোরতর সন্দেহ হইয়াছে। তাঁহার আফিসে ও বাড়ীতে খবর লওয়া হইতেছে। কমলা অতিশয় দুঃখিত। দিল্লী হইতে লাহোরে গেলাম।

 রমেশ-দা পূরা এক বৎসরও চাকুরী করেন নাই। এরই মধ্যে তিনি কিরূপে চারিমাসের ছুটী পাইলেন, একথা কখনও আমার মনে হয় নাই।

 কতদিন কাজ করিলে কতদিন ছুটী মিলে—কোন্ আফিসের কি রকম দস্তুর, ইহার খোঁজ খবর কাব্য উপন্যাসে পাওয়া যায় না। আমি ভাবিয়াছিলাম আফিসের কেরাণীরা চাহিলেই ছুটী পায়।

 আমরা রেলপথে সেকেণ্ড ক্লাসে ভ্রমণ করি। বর্দ্ধমানে গাড়ীতে উঠিয়া রমেশ-দা সুটকেস্ খুলিলেন। আমার সম্মুখে পাঁচ তাড়া নোট্ রাখিয়া বলিলেন “মানু, এই আমাদের সম্বল”। আমি গুণিয়া দেখিলাম প্রত্যেক তাড়ায় ১০০ খানি পাঁচ টাকার নোট্। এই আড়াই হাজার টাকা রমেশ-দা কোথায় পাইলেন তখন ভাবি নাই। মাসিক ২০০ টাকা হিসাবে এক বৎসরের বেতনও আড়াই হাজার হয় না। রমেশ-দা বোধ হয় বড়লোকের ছেলে——বাপের টাকা উড়াইতেছেন। তাওত নয়। আমার পিতার কাছে রমেশ দা চাকুরী প্রার্থী হইয়াছিলেন। অর্থাভাবে মাসাবধি তিনি আমাদের গৃহে অন্ন গ্রহণ করিয়াছিলেন।