পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভুল ভাঙ্গিল
৬১

পকেট হহতে রুমাল বাহির করিয়া আমার চক্ষের জলবিন্দু মুছাইয়া দিলেন। এসেন্সের মৃদু সুবাস আমাকে পুলকিত করিয়া চারিধারে ছড়াইল। আমরা নিকটবর্ত্তী একখানা বেঞ্চির উপরে বসিলাম।

 তিনি বলিলেন “মানু, তোমার জন্য সমস্ত ছাড়িয়া আসিলাম। নিজের স্ত্রী, বিধবা মা, ছোট ভাইবোন সকলের কথা আজ তোমারই জন্য ভুলেছি। শেষে তুমিও আমায় পরিত্যাগ করবে? তোমায় নিয়ে কি বিপদের সম্মুখে ঝাঁপিয়ে পড়েছি, তা দেখেই বুঝতে পার তোমায় কত ভালবাসি।” রমেশ-দা আবার আমাকে বুকে চাপিয়া ধরিলেন। আজ আমার এ সকল আদর সোহাগ যেন ভাল লাগিতেছিল না। সম্মুখের অস্পষ্ট অন্ধকারের দিকে আমি স্থির দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিলাম। আমার হাত দুখানি কোলের উপরে অঞ্জলিবদ্ধ ছিল। রমেশ-দা আমার ডান হাতখানি তুলিয়া তাঁহার নিজের কাঁধের উপর নিয়া রাখিলেন। আমি রমেশ-দাকে অনাদর করিয়াছি ভাবিয়া লজ্জিত হইলাম।

 চারিদিক নিস্তব্ধ। পার্শ্ববর্ত্তী প্রশস্ত পথ দিয়া শৈলবিহারী সৌখীন লোকদের দুই একখানি মোটর গাড়ী মাঝে মাঝে মৃদুশব্দে চলিয়া যাইতেছে। রমেশদা বলিলেন ‘চুপ করে আছিস্ কেন—কি হয়েছে?” আমি বলিলাম “না কিছু হয়নি। আজ কমলার চিঠি এসেছে, তুমিত দেখেছ”। আমি ডান হাত দিয়া ভাল করিয়া রমেশদার গলা জড়াইয়া ধরিলাম।

 একটা সিগারেট ধরাইতে ধরাইতে তিনি বলিলেন “ওঃ——বাড়ীর কথা মনে পড়েছে বুঝি— আরে তুই একেবারেই কচি খুকিটি!” একগাল ধোঁয়া ছাড়িয়া তিনি পুনরায় বলিলেন, “আচ্ছা মানু,