পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

বাড়ীতে তোমার কি আকর্ষণ আছে বল দেখি।— মনে কিছু ক’রোনা; আমি স্বরূপ কথাই বলছি। তোমার মা নাই—ভাই বোন নাই। পিতা দ্বিতীয় পক্ষের ষোড়শী পত্নীকে নিয়ে আমোদ করে বেড়াচ্ছেন—মেয়ের দিকে ফিরেও চাননা, শোবার ঘর থেকে কৌশল করে তোমায় সরিয়েছেন—তোমার মায়ের ছবিখানিকেও দূর করে দিয়েছেন। সেখানে তোমার কি সুখ আছে বল!”

 আজ রমেশ-দা অমন কথা বলিলে তার উত্তর আমি অন্যরূপ দিতাম্। কিন্তু তখন আমি ভাবিয়াছিলাম সত্যই “রমেশদা, আমি মরুভূমি থেকে ছুটে এসে শীতল জলধারার সন্ধান পেয়েছি— আমায় ক্ষমা কর। তুমি আমার জন্য কি ছেড়ে এসেছ, তা দেখবার আমার প্রয়োজন নাই, আমার সম্মুখে তুমি যে প্রেমের নৈবেদ্য সাজিয়ে এনেছ, আমি শুধু তাই দেখছি।”

 সেখান হইতে একটা টাক্সি ভাড়া করিয়া আমরা সিনেমায় গেলাম। আমার হৃদয়ের প্রফুল্লতা ফিরিয়া আসিল। আমি মনে করিলাম, কেন বৃথা দুশ্চিন্তার ভার বৃদ্ধি করিতেছি। যখন সুধার পাত্র সম্মুখে রহিয়াছে, তখন কোন মূর্খ তাহা গ্রহণ না করিয়া মুখ ফিরাইয়া চলিয়া যায়?

 কমলার যে পত্রের কথা পূর্ব্বে বলিয়াছি তাহাতে সে আমাকে লিখিয়াছিল যে সে আমার পিতার সহিত সাক্ষাৎ করিয়াছে। তিনি আমার জন্য খুব মনকষ্ট পাইতেছেন। পুলিশকে তিনি জানাইবেন না—অথবা কোন মামলা মোকদ্দমাও করিবেন না। বিমাতা আমার কথা মনে করিয়া কাঁদেন। হরিমতি তাহার ভবিষ্যৎ বাক্য