পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

সাক্ষাৎ হইত। আমার কেবলি ভয় হয়, কখন পরিচিত ব্যক্তির সহিত দেখ। হয়— আর ধরা পড়িয়া যাই।

 আমি একদিন রমেশদাকে বলিলাম, চল এখান থেকে যাই। চারিদিকে বাঙ্গালী——ফস্ করে কবে চেনা পরিচিত কেউ দেখে ফেল্‌বে, তখনই মুস্কিল”। রমেশদা ইজি চেয়ারে লম্বা হাতলের উপর পা তুলিয়া নিশ্চিন্ত মনে চুরুট টানিতে টানিতে বলিলেন— মেয়েলি বুদ্ধি নিয়ে কি শর্ম্মারাম কাজ করে? জানিস্ এই কাশীতে যত বাঙ্গালী আছে তার অধিকাংশই তোর রমেশ-দার দলের। কেহবা কারো ঘরের বউ বের করে এনেছেন—কেউ বা বিধবা পোয়াতি খালাস করতে এসেছেন—কেহ আপন রক্ষিতা নারীর হাওয়া বদলাচ্ছেন—আবার এমন কেহ আছেন যাহারা নিজের আত্মীয়া দ্বারা পাপ ব্যবসায় করাচ্ছেন। বাঙ্গালার কলঙ্কের এই তিনটী স্থান—নবদ্বীপ, কাশী ও বৃন্দাবন। ভয় কচ্ছিস্ কাকে? কে কাকে নিন্দা করবে? এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায় দেখ। পথের জনসঙ্ঘ কর্তৃক লাঞ্ছিতা এক পতিতা নারী প্রভু যীশুখৃষ্টের আশ্রয় নিয়াছিল। যীশুখ্রীষ্ট সমবেত জন-মণ্ডলীকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, তোমাদের মধ্যে যে নিষ্পাপ সে প্রথমে এই নারীর প্রতি লোষ্ট্র নিক্ষেপ কর। তখন কেহই অগ্রসর হইল না। বাইবেলে এই কথা আছে—মনে আছে? আমি বলিলাম “হাঁ, আছে। তুমি যেমন লোক, কাশী বৃন্দাবন নবদ্বীপকে সেই ভাবেই দেখছ। পুণ্যের দিক তোমার চোখে পড়বে কেন? তা যাই হউক, তবু চল। এখানে বেশীদিন থেকে কাজ নেই।”