পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

নাম। আমি বাহির হইয়া গেলাম। রমেশদা বাড়ীতে রহিলেন।

 ঝুলনের সময় মথুরার মন্দিরে মন্দিরে খুব আমোদ প্রমোদ হয়। দ্বারকাধীশের মন্দিরেই সর্ব্বাপেক্ষা বেশী। স্বর্ণ-রৌপ্য-মণ্ডিত বৃহৎ সিংহাসনে ঠাকুরকে বসাইয়া দোলান হয়। সমস্ত মন্দির আলোক, পুষ্পপত্র, পতাকায় সুসজ্জিত হইয়া এক অপূর্ব্ব শ্রী ধারণ করে। গায়কগণ সুললিত স্বরে ভজন গানে রত থাকেন। এই সকল দর্শন করিলে নানা দুঃখ ও বিপদের মধ্যেও শান্তির ভাব আসে।

 আমরা বিশ্রাম ঘাটের আরতি এবং আরও দুই তিনটী মন্দিরে ঝুলন দেখিয়া রাত্রি প্রায় ৯টার সময় বাড়ীতে ফিরিলাম। ঘরে যাইয়া দেখি রমেশদা নাই। আলো জ্বলিতেছে। শোবার খাটিয়ার উপরে একখানি চিঠি রহিয়াছে। পড়িয়া দেখিলাম তাহাতে এরূপ ভাবের লেখা ছিল—

 “মানু, তোমার সঙ্গে আর থাকা যায় না। তুমি আমায় চোর, লম্পট, মাতাল বলে ঘৃণা করতে আরম্ভ করেছ। যেখানে ঘৃণা ও সন্দেহ, সেখানে ভালবাসার স্থান নাই। আজ আমি তিন হাজার টাকা আফিসের ক্যাশে গুঁজে দিলেই আমার চোর অপবাদ ঘুচবে—আরও দু’চার দশটা মেয়ে বের করলেও, আমি সমাজে বুক ফুলিয়ে বেড়াব— আর মদ্যপান, সেত বড়লোকের লক্ষণ। তুমি নিজের ভাল বুঝলে না। তোমার আর উদ্ধার নাই। দেখব তোমার নব জাগ্রত নীতিজ্ঞান তোমাকে কতদূর রক্ষা করে। আমি চল্লাম—আমায় খুঁজোনা। পুলিশ আমার পিছু নিয়েছে। তুমি অবিলম্বে এই বাড়ী ছেড়ে যেও।”

 আমার হঠাৎ মনে হইল, একটা পর্ব্বত-প্রমাণ বোঝা যেন