পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাপের পথে
৭৫

আমার মাথার উপর হইতে সরিয়া গেল। ডুবিতে ডুবিতে আমি যেন জলের উপরে নাক তুলিয়া একটু নিশ্বাস ফেলিয়া বাঁচিলাম। রমেশদার ব্যবহার আমার এত অসহ্য হইয়াছিল। আমি স্বাধীনতা চাহিয়াছিলাম, ভগবান বুঝি তাহারই পথ খুলিয়া দিলেন।

 রাত্রিতে রান্না খাওয়া হইল না। গভীর রাত্রিতে আমার মনে নানা দুশ্চিন্তা আসিল। এখন কি করি, কোথায় যাই। ভাবিলাম, দুর্ব্বল চিত্ত হইলে চলিবেনা। আনিদ্রায় রাত্রি কাটিল। সকালে উঠিয়া চারিদিকে চাইতেই রমেশদার জন্য দুঃখ হইল। চা তৈয়ারী করিলাম না। লছমনকে ডাকিয়া বলিলাম “আমি বৃন্দাবনে যাব, একখানি এক্কা অথবা টাঙ্গা ঠিক করে দাও।”

 আমার গহনার মধ্যে হাতে দুগাছা সোনার চুড়ী ও কাণে একজোড়া দুল মাত্র অবশিষ্ট ছিল। সে সমস্ত বিক্রয় করিয়া চাকরের তিনমাসের বেতন চুকাইয়া দিলাম। আমার হাতে কিছু টাকাও রহিল। সেই সময়ে কমলার একখানি চিঠি পাইলাম। সে লিখিয়াছে, “রমেশবাবুর সঙ্গে পলায়ন করা তোমার ভুল হইয়াছে। এ প্রকার প্রেমের মিলন যেমন হঠাৎ এসে পড়ে, বিচ্ছেদও তেমনি হঠাৎ হয়ে যায়। তোমাদের উভয়ের বিবাহে এমন বিশেষ কিছু বাধা ছিল না। তোমার পিতারও বোধ হয় অমত হ’ত না। এখনও তুমি ফিরে এসে ভ্রম সংশোধন করতে পার।”

 কমলার উপদেশ আমার ভাল লাগিল না। তাহার পত্রের কোন উত্তর দিলাম না। বৃন্দাবনে যাইয়া সেবা-কুঞ্জের নিকটে