পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৬
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

তাহা সকল সময়ে হয় না। বহুদিনের অভিজ্ঞতায় আমি একথা বলিতেছি।

 উদ্ধার আশ্রমের কর্ত্তীপক্ষদের নিকট আমি পিতার পরিচয় ও বাড়ীর ঠিকানা সমস্তই গোপন করিয়াছিলাম। তাঁহারা শুধু এইমাত্র জানিলেন, আমি উচ্চ বংশীয় ব্রাহ্মণের মেয়ে। কুমারী অবস্থায় কোন দুষ্ট লোক আমাকে ঘরের বাহির করিয়া নিয়াছিল। সে গর্ভাবস্থায় আমাকে ছাড়িয়া পলাইয়াছে। রমেশদার নামও আমি প্রকাশ করিলাম না। আমি লেখাপড়া কিছু জানি, ইহা প্রকাশ হইল।

 বৃন্দাবন হইতে কলিকাতা আসিতে আমার খুব আগ্রহ জন্মিয়াছিল। তাহার কারণ, আমি আশা করিয়াছিলাম, আর যাহাই হউক অন্ততঃ মুকুলদা ও কমলাকে দেখিতে পাইব। অকুল সমুদ্রে এই দুইটী বন্ধু আমার তৃণ-স্বরূপ। কিন্তু উদ্ধার আশ্রমে প্রবেশ করিয়া দেখিলাম, তাহাদের খবর পাওয়া সহজ ব্যাপার নহে।

 শীঘ্রই কয়েকটা সমবয়সী মেয়ের সঙ্গে আমার বিশেষ ঘনিষ্ঠতা জন্মিল। ইহাদের মধ্যে রাজবালা ও কালীদাসী এই দুইজন ছিল প্রধান। ইহাদের কথা এই পুস্তকের স্থানে স্থানে আরও কয়েক বার উল্লেখ করা হইবে। সুতরাং ইহাদের একটু পরিচয় দিতেছি। রাজবালা সোণার-বেণের মেয়ে। বাপের বাড়ী কলিকাতায়, অল্পবয়সে তাহার বিবাহ হইয়াছিল। পিতা ও শ্বশুর উভয় পরিবারই সঙ্গতিপন্ন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ বিবাহের এ বৎসর পরেই হতভাগিনী বিধবা হয়। তৎপরে পিতার প্রতিবেশী এক পূর্ব্ববঙ্গবাসী কায়স্থ যুবকের সহিত তাহার গুপ্ত প্রণয় জন্মে