পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৮
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

সেমিজ, পরিপাটী বিছানা। অন্যান্য মেয়েরা কেহ কেহ আমাকে এজন্য ঈর্ষা করিত। রাজবালা ও কালীদাসী আমাকে দেখিলেই মুচকি হাসিয়া বলিত, “এবার তোর ভাই কপাল ফিরেছে।”

 কর্ত্তৃপক্ষদের মধ্যে একজন আমার প্রতি বিশেষ আকৃষ্ট হইলেন। আমিও ধরা দিলাম। তিনি আমার ঘরে মাঝে মাঝে রাত্রি যাপন করিতেন। জানিলাম, আমার মেয়ে-বন্ধুদের গৃহেও কর্ত্তৃপক্ষদের অপর কেহ কেহ গোপনে যাতায়াত করিয়া থাকেন। এইরূপে কিছুদিন অতীত হইল।

 একদিন আমি আমার গুপ্ত প্রণয়ীর নিকট বিবাহের প্রস্তাব করিলাম। কিন্তু তিনি সম্মত হইলেন না। আমার সমবয়সী মেয়েরা মিলিয়া মাঝে মাঝে আমাদের গুপ্ত প্রণয়ের কথা তুলিয়া হাস্য পরিহাস করিত। রাজবালা ও কালীদাসীর সহিত প্রাণের কথা হইত। আমার পরামর্শে উহারা দু’জনেও বিবাহের প্রস্তাব করিয়াছিল। কিন্তু কোন ফল হইল না। আমি বলিলাম “ভাই, যদি রূপ, যৌবন বেচতে হয়, তবে লুকিয়ে চোরের মত কেন— একেবারে বাজারে নেমে দর যাচাই করে উপযুক্ত মূল্যে বিক্রয় করব।” রাজবালা ও কালীদাসী সেইদিন হইতে তাহাদের প্রণয়ীদিগকে আর ঘরে প্রবেশ করিতে দিল না। আমিও তাহাই করিলাম। আমাদের উপর নানা উৎপীড়ন ও অত্যাচার আরম্ভ হইল। আমরা স্থির করিলাম, উদ্ধার আশ্রমে আর থাকিব না, কিন্তু আমরা নিরাশ্রয়-নিঃসহায়, কোথায় যাই।

 তখন ইউরোপে মহাযুদ্ধ ভীষণভাবে চলিতেছে। ভারতবর্ষ হইতে বহু সংখ্যক শুশ্রূষাকারিণী নারী আহত সৈন্যদের সবার জন্য