পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯০
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

হইবে) এই চারিজন একখানি ঘোড়ার গাড়ী ভাড়া করিয়া ঢালীগঞ্জে আসিলাম। সেখান হইতে ট্রামে আমরা কর্ণওয়ালিস ষ্ট্রীটে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের উপাসনা মন্দিরে উপস্থিত হইলাম।

 এই স্থানটী আমার পরিচিত ছিল। বাল্যকালে পিতার সহিত এই উপাসনা মন্দিরে অনেকবার আসিয়াছি। আজ সেই কথা মনে পড়িয়া চক্ষে জল আসিল। উপাসনা শেষ হইয়াছে। সমবেত উপাসকগণ প্রায় সকলেই চলিয়া গিয়াছেন। কেবল কয়েকজন বিশিষ্ট লোক অপেক্ষা করিতেছিলেন। আমাদের ব্রাহ্ম মহিলার মত কাপড় পড়া ছিল; পায়ে জুতাও ছিল, আমরা অগ্রসর হইয়া গেলাম।

 ব্রহ্ম সমাজে আসিবার ষড়যন্ত্র আমরা অনেক দিন হইতেই করিতেছিলাম। রাজবালাই ইহার মূল কারণ। সে বলিয়াছিল ব্রাহ্ম সমাজ সকলকেই গ্রহণ করে, ব্রাহ্ম ধর্ম্ম অবলম্বন করিলে বিবাহ করা সহজ হইবে। কিন্তু শেষে আমরা দেখিলাম, সেখানেও বাধা আছে।

 সম্মুখে একজন পঙ্ক-কেশ-শ্মশ্রু বিশিষ্ট দীর্ঘাকৃতি বলিষ্ঠদেহ বৃদ্ধকে দেখিয়া রাজবালা আমার কানে কানে বলিল “এই বুঝি কৃষ্ণ কুমার মিত্র— প্রণাম কর।” আমরা চারি জনেই পাদষ্পর্শ করিয়া প্রণাম করিলাম। তিনি স্নেহপূর্ণ স্বরে আমাদের আগমনের কারণ জিজ্ঞাসা করিলে, আমরা তাঁহাকে একপাশে ডাকিয়া নিয়া সকল কথা বলিলাম, এবং আমাদের রক্ষার উপায় করিতে অনুরোধ করিলাম। উদ্ধার আশ্রমের কর্ত্তৃপক্ষদের দুর্ব্ব্যবহার ও আমাদের ব্রাহ্ম ধর্ম্ম গ্রহণের অভিলাষ তাঁহাকে জানাইলাম।

 তিনি বলিলেন “আপনাদের রক্ষার উপায় একাকী আমার দ্বারা