পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সমাজ চিত্র
১০৫

ভিক্ষা করিত। বেশ্যা-পল্লীতেও তাহারা আসিত। আমরাও সেই সাহায্য ভাণ্ডারে যথাসাধ্য অর্থ দিয়াছি।

 একদিন আমার সেই চিকিৎসক বাবু আমাকে বলিলেন “মানী, তোমারা পতিতা নারীরা মিলে যদি কিছু চাঁদা তুলে ঐ ইষ্টবেঙ্গল সাইক্লোন ফণ্ডে পাঠাও, মিঃ সি, আর, দাশ তা’হলে বিশেষ সন্তুষ্ট হ’বেন। তাঁর ইচ্ছা, এই সংকার্য্যের জন্য সমাজের সকল স্তরেই সাড়া পড়ুক। কি বল— পারবে?”

 আলি বলিলাম— “দেখুন, আমি ত এ পথে নূতন। সকলের সঙ্গে চেনাশুনা নাই। আপনি ভরসা দিলে আমার যতদূর সাধ্য করব।” তিনি বলিলেন, “রামবাগান, সোনাগাছি, ফুলবাগানে আমর জানাশুনা আরও কয়েকজন মেয়ে মানুষ আছে— থিয়েটারের অভিনেত্রীদেরও এর মধ্যে আনা যায়!”

 চিকিৎসক মহাশয়ের সঙ্গে নাকি মিঃ সি, আর, দাশের পরিচয় ছিল, তাঁহার ও কতিপয় বন্ধুর চেষ্টায় কলিকাতার বেশ্যা পল্লী হইতে কয়েক সহস্র টাকা চাঁদা উঠিল। জনসাধারণের কার্য্যে এই আমার প্রথম যোগদান। এই সুযোগে আমি মিঃ সি, আর, দাশকে প্রথম স্পর্শ করিয়াছিলাম। আমরা যখন প্রণাম করিয়া তাঁহার পায়ে টাকার তোড়া রাখিলাম, তখন আনন্দাশ্রুতে তাঁহার বক্ষ প্লাবিত হইল। তিনি আমাদের মস্তক স্পর্শ করিয়া আশীর্ব্বাদ করিলেন। বুঝিলাম তিনি সতাই দেশবন্ধু।

 রাজবালার সহিত একদিন দেখা করিতে গিয়া দেখি, তাহার ঘরে খুব ভাল দামী আসবাব পত্র আসিয়াছে। একখানা পালঙ্ক, দেওয়াল আয়না, বুক্‌‌কেস্‌ এই সব জিনিষে ঘর সাজান