পাতা:শিখগুরু ও শিখজাতি.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিছুদিমপৰ্য্যস্ত তাহার বেগ নিঃশেষিত হয় মাই। কিন্তু শিবাজী সেই ভাবের আধারটিকে পাকা করিয়া তুলিতে পারেন নাই, এমন কি. চেষ্টামাত্র করেন নাই, সমাজের বড় বড় ছিদ্রগুলির দিকে না তাকাইয়। তাহাকে লইয়া ক্ষুব্ধ সমুদ্রে পাড়ি দিলেন । তথলি পাড়ি না দিলে লম্ব বলিয়া এবং পাড়ি দিবার আর কোমো উপকরণ ছিলনা বলিয়াই যে অগত্য এই কাজ করিয়াছেন তাহী নহে । এই ছিদ্রকেই পার করা তাহার লক্ষ্য ছিল। শিবাজী যে হিন্দুসমাজকে মোগলআক্রমণের বিরুদ্ধে জয়যুক্ত করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন, আচারবিচারগত বিভাগ বিচ্ছেদ সেই সমাজেরই একেবারে মূলের জিনিষ। সেই বিভাগমূলক ধৰ্ম্মসমাজকেই তিনি সমস্ত ভারতবর্ষে জয়ী করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন । ইহাকেই বলে বালির রাধ বাধা --ইহাই অসাধ্যসাধন । শিবাজী এমন কোনো ভাবকে আশ্রয় ও প্রচার করেন নাই যাহা । হিন্দুসমাজের মূলগত ছিদ্রগুলিকে পরিপূর্ণ করিয়া দিতে পারে। নিজের ধৰ্ম্ম বাহির হইতে পীড়িত অপমানিত হইতেছে এই ক্ষোভ মনে লইয়া তাহাকে ভারতবর্ষের সর্বত্র বিজয়ী করিবার ইচ্ছা স্বাভাবিক হইলেও । তাহা সফল হইলার নহে ; কারণ ধৰ্ম্ম যেখানে ভিতর হইতেই পীড়িত হইতেছে, যেখানে তাহার ভিতরেই এমন সকল বাধা আছে যাহাতে মানুষকে কেবলি বিচ্ছিন্ন ও অপমানিত করিতেছে সেখানে সেদিকে দৃষ্টিপাতমাত্র না করিয়া, এমন কি, সেই ভেদবুদ্ধিকেই মুখ্যতঃ ধৰ্ম্মবুদ্ধি বলিয়া জ্ঞান করিয়া সেই শতদীর্ণ ধৰ্ম্মসমাজের স্বারাজ্য এই স্ববৃহৎ ভারতবর্ষে স্থাপন করা কোনো মানুষেরই সাধ্যায়ত্ত নহে, কারণ তাহা বিধাতার বিধান-সঙ্গত হইতে পারে না । কেবল আঘাত পাইয়া ক্রুদ্ধ হইয়া অভিমান করিয়া কোনো জাত বড় হইতে জয়ী হইতে পারে ন-যতক্ষণ তাহার ধৰ্ম্মবুদ্ধির মধ্যেই অখণ্ডতার তত্ত্ব কাজ করিবার