পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ケ8 শিখ-ইতিহাস প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। পীর ও মেল্লি, সাধু ও পণ্ডিত,—সকলকেই তিনি চমকিত করিয়াছিলেন। কিন্তু তাহার এখনও একটি কার্য অবশিষ্ট আছে। সে কার্য,-প্রবল -প্রতাপ মুসলমান সম্রাটের সৈন্যগণের নিধনসাধন এবং অসংখ্য ঘৃণিত ধমাবলম্বীদিগের উচ্ছেদ-বিধান। যাহারা প্রাচীন রোমের দৃঢ় শাসন ও কূট-রাজনীতি আলোচনা করিয়া থাকেন ; য’iহারা আধুনিক ইউরোপের প্রভুত্ব-ক্ষমতা ও রাজ্যশাসন-নীতির স্ববন্দোবস্ত প্রত্যক্ষ দেখিয়াছেন,—র্তাহাঁদের নিকট হয়ত গোবিন্দের এই কল্পনা ও বিধি-ব্যবস্থা অসভ্যতা ও প্রলাপের পরিচায়ক বলিয়া অকুমিত হইবে । কিন্তু এসিয়ায় বিস্তৃত রাজ্য -সমষ্টি, ইউরোপের অৰ্দ্ধ-অসভ্য জাতির অধিকৃত রাজ্যের ন্যায়, অসংখ্য লোকসমষ্টির গভীর বিশ্বাসভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত নহে ; তাহার একই জাতীয় বিভিন্ন রাজবংশে বিভক্ত । সামরিক শক্তির ক্রমবিকাশে, এবং দলপতিগণের প্রতিভা শক্তিতে তাহারা বিজয়োল্লাসে মত্ত হইয়াছিল। এক বংশের পর অপর বংশ পর্যায়ক্রমে প্রাধান্য লাভ করিত। সাইরাস এই প্রভেদ-ব্যঞ্জক রীতি গ্রহণ করিয়াছে। পুর্বে এই নীলবর্ণ পরিচ্ছদ-পরিধান একরূপ নিয়মাধীন ছিল ; এক্ষণে তাহারা আর সে প্রথা অনিবার্য বলিয়া মনে করে না। সম্ভবতঃ হিন্দুধর্মের প্রতি ক্ষিপতাচরণের ফলেই এতদুভয় প্রথার স্বষ্টি হয় । বহুসংখ্যক ব্রাহ্মণ সন্ন্যাসিগণ যত্ব সহকারে মস্তক মুগুন করেন ; ধর্মকার্যে, প্রথম দীক্ষাকালে এবং নিকট সম্পৰ্কীয় আত্মীয়ের মৃত্যুতে হিন্দু জাতি মন্তকামুগুন করিয়া থাকে। আরও আশ্চর্যের বিষয় এই যে, অনেক ধাৰ্মিক ব্যক্তি এবং সন্ত্রাস্ত হিন্দুগণ এখনও নীলবর্ণ ঘৃণা করেন। আজিও রাজপুত কৃষকগণ জমিতে নীল বপন করে না ; তাহার এ কার্য লজ্জাস্কর বলিয়া মনে করে। অন্তপক্ষে, মুসলমানগণ নীলপোষাক বিশেষ পছন্দ করে। হয়ত, মুসলমান-রাজত্বের সময় হইতেই নীলবর্ণের প্রতি হিন্দুদিগের বিদ্বেষভাব জন্মিয়াছে। অষ্ঠাস্ত বর্ণনার মধ্যে কৃষ্ণের নীলবর্ণ পরিচ্ছদ পরিধানের বিষয়ও উল্লিখিত আছে। যাহা হউক, নানকের বিষয় উল্লেখকালে, ‘ভাই গুরুদাস’ নামক একজন শিখ গ্রন্থকার বলিয়াছেন,—“যখন আমরা মক্কায় গিয়াছিলাম, তখন নানকের পরিধানে কৃষ্ণের স্তায় নীলবর্ণের পোষাক ছিল। সেইরূপ শিখদিগের কেহই নুহি’ রঙ্গের অথবা কুকুমজাতীয় পুষ্প-রঙ্গে রঞ্জিত পরিচ্ছদ পরিধান করে না। বহুদিন পর্যন্ত হিন্দুগণ এই রঙ বিশেষ ভালবাসিত। কিন্তু আজকাল এই রঙ ক্রমে ক্রমে ফকিরদিগের বিশেষ আদরনীয় হইয়। উঠিয়াছে। শিখজাতি ধূমপান করে না ; অথবা অন্ত কোন মাদক দ্রব্য সেবন করে না। নিষিদ্ধ দ্রব্যের মধ্যে প্রথমতঃ তামাকের নস্তই নিষিদ্ধ হইয়াছিল। নস্ত নিষিদ্ধ দ্রব্য ; কাজেই তামাকও কেহ ব্যবহার কল্পিত না। ১৬১৭ খৃষ্টাব্দে ভারতবর্ষে প্রথমে তামাকের আমদানি হয়। (M'Culloch's Commercial Dictionary, “art-Tobacoo’) wins: cafo go, afo Gofa zoo gotá staff বহিষ্কারের বৃথা চেষ্টা করেন ; কিন্তু আজকাল ভারতীয় মুসলমানগণ সকলেই ধুমপান করিয়া থাকেন ; তামাক ব্যবহার করেন । পার্থক্যের আর একটি চিহ্ন লক্ষিত হয় ;–শিখগণ একপ্রকার পা-জামা পরিধান করে। কিন্তু হিন্দুগণ যেরূপে গাত্র আবরণ করিয়া থাকে, শিখগণ সকলেই তদ্বিপরীতভাবে পেষ্টলান পরিধান করিয়া থাকে।রোমীয় যুবকের পক্ষে টগা ভিরিলিগ দ্বারা ধর্মাধিকার প্রদান করা যেরূপ অত্যাবগুৰীয় ; শিখ বালকেরও তেমনই 'কুচ' বা ‘পায়জামা' গ্রহণ বিশেষ প্রয়োজনীয়। হিন্দু রমণীগণ একই রকমের পরিচ্ছদ ব্যবহার করে। কিন্তু শিখ রমণীগণ বহু প্রকারের পোষাক পরিধান করিয়া থাকে। প্রধানতঃ তাহাদের উচ্চ খোপা বিশেষ পার্থক্য-পরিচায়ক।