পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রণজিৎ সিংহের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা SS X প্রতি বিশ্বাসবান হইয়া, বীর এবং ধর্মবিশ্বাসী ব্যক্তিগণ যতদূর পর্যন্ত অগ্রসর হইতে পারেন, ততদূর পর্যন্ত সৈন্য পরিচালনা করিবেন। শাসন নীতির উচ্চ কল্পনায় অথবা বাহ সৌকর্যসাধনে তিনি কখনও প্রয়াসী হন নাই। তিনি কেবল রাজ্য বিস্তারের জন্যই সচেষ্ট ছিলেন ; বাণিজ্য-ব্যাপারে তিনি যে ন্যায়পরতার পরিচয় দিতেছেন, ইংরেজ প্রতিবেশীদিগের নিকট সে প্রশংসা শুনিবার জন্য তিনি আদৌ উৎসুক ছিলেন না । বিভিন্ন মতাবলম্বী মুর্থ ও উন্মত্ত প্রজাবর্গের স্বশাসনের জন্য, তিনি ইংরাজদিগের প্রশংসাভাজন হইতে প্রয়াসী হন নাই। তিনি উৎপন্ন শস্তের ন্যায়সঙ্গত অংশ গ্রহণ করিতেন ; ব্যবসায়িগণ আপনাপন লভ্যাংশের উপর সস্তুষ্টচিত্তে যে পরিমাণ কর প্রদান করিতে সমর্থ হইত, তিনি তাঁহাই লইতেন । তিনি প্রকাশু লুঠ-তরাজ বন্ধ করিয়াছিলেন ; শিখ-কৃষকদিগের উপর সামান্য মাত্র কর নিৰ্দ্ধারিত হইয়াছিল । স্থানীয় কোন রাজকর্মচারী কোন "খলিসার’ প্রতি পীড়ন করিতে সাহসী হইতেন না ; রাজস্ব-সংগ্ৰহকারিগণ যদি কোথায়ও অত্যাচার-অবিচারের দরুণ বাধা প্রাপ্ত হইতেন, তাহা হইলে তাহাঁদেরই পদচ্যুতি ঘটিত ; তাহাদিগের উদ্বেগু-সাধন বিষয়ে কদাচ সৈন্য সাহায্য প্রদান করা হইত না । যাহারা স্বহস্তে সে অত্যাচারের প্রতিকার করিতে পারিত, তিনি সাধারণতঃ তাহাদিগের প্রতি শাস্তিবিধান করিতেন না ; সেরূপ ক্ষেত্রে, তাহার অধীনস্থ কর্মচারিগণ সর্বদাই সতর্কতার সহিত কার্য করিত। শিখ-জাতির সমুদায় ঐশ্বর্য এবং সমস্ত শক্তি যুদ্ধব্যাপদেশে এবং সামরিক অস্ত্রাদি নির্মাণ ও সাজসজ্জাদি সরবরাহে উৎসর্গীকৃত হইয়াছিল। জায়গীর ( Feudal ) প্রথার অাদর্শক্রমে র্তাহার রাজ্য-শাসনপ্রণালী গঠিত হইয়াছিল। তাহাতে ব্যক্তিগত উচ্চাভিলাষ চরিতার্থের এবং চরিত্রগত স্বাধীনতা রক্ষার সুযোগ প্রদান করিয়াছিল। এইরূপ শাসনপ্রণালী শিখ-জাতির বিশেষ উপযোগী হইয়াছিল ; তাহারা যথেষ্ট কার্য পাইয়াছিল ; তাহারা যুদ্ধবিগ্রহে অভ্যস্ত হইয়াছিল। নগরের পর নগরে খালসার আধিপত্য বিস্তৃত হওয়ায়, তাহাদের সন্তোষ বৃদ্ধি করিয়াছিল ; এতদ্বারা তাহাদের পরিবারবর্গ ধনশালী হইয়াছিল। কিন্তু রণজিৎ সিং কখনও স্বেচ্ছাচারী বা অত্যাচারী রাজার দ্যায় ক্ষমতালাভ বা উপাধি গ্রহণ করিতে যত্বপর হন নাই। তিনি ধর্মানুষ্ঠানে নিবিষ্টচিত্ত ছিলেন ; তিনি ধাৰ্মিক মহাত্মাগণকে ভক্তি করিতেন, এবং বহু দান-ধর্মাচরণে র্তাহাদিগকে সাহায্য করিতেন । রণজিৎ সিংহ মনে করিতেন,— ঈশ্বরাষ্ট্রগ্রহেই সর্ব বিষয়ে সিদ্ধিলাভ হয় । তিনি আপনাকে এবং শিখ-জাতিকে ‘খালসা" অথবা গোবিন্দের সাধারণ-তন্ত্র নামে অভিহিত করিতেন। যখন তিনি নগ্নপদে শিখগুরুদিগের প্রতি সন্মান প্রদর্শন করিতেন, যখন তিনি র্তাহার স্বদলভুক্ত দীর্ঘশ্মশ্র সমন্বিত প্রসিদ্ধ পুরুষগণকে পুরস্কৃত করিতেন, যখন তিনি ধর্মোন্মত্ত "আকালি সম্প্রদায়ের অমিতাচার প্রশমনকল্পে উদ্যোগী হইতেন, অথবা যখন তিনি বিপক্ষ সৈন্যগণকে ধ্বংস করিয়া, নূতন রাজ্য অধিকার করিতেন —কখনই তিনি আপনার প্রতিষ্ঠা-প্রচারে বা