পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/২৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রণজিৎ সিংহের প্রাধান্ত প্রতিষ্ঠা ●》 অল্পপৃহীত ব্যক্তি বোধে যাহাদিগের প্রতি কিঞ্চিম্মাত্র বিশ্বাস স্থাপন করা যাইতে পারে, —সেই বিদেশী ব্যক্তিবর্গকে তিনি আশ্রয় প্রদান করিতেন। প্রখম যে ব্যক্তি এইরূপে প্রসিদ্ধি লাভ করে, তাহার নাম, – খোসহাল সিং । তিনি ব্রাহ্মণবংশীয় এবং সাহরাণপুরের অধিবাসী । রণজিৎ সিং প্রথমে যে সৈন্যদল গঠন করেন, ইনি সবাগ্রে সেই সৈন্যদলে প্রবিষ্ট হন ; তৎপর মহারাজের সৈন্য-শ্রেণীর একজন বাহক বা পদাতিক নিযুক্ত হইয়াছিলেন। ক্রমে তৎপ্রতি মহারাজের দৃষ্টি আক্ষধিত হইল। ১৮১১ খ্ৰীষ্টাব্দে তিনি দেউরির জমাদার অথবা প্রবেশদ্বারের দ্বারপাল নিযুক্ত হইলেন। র্তাহার ভ্রাতা তাহাকে স্থানচ্যুত করিবার উপক্রম করিয়াছিল ; কিন্তু তিনি শিখধর্ম গ্রহণ করিতে অস্বীকার করায়, খোসস্থাল সিংহের আধিপত্যই অক্ষুন্ন রহিল। পরিশেষে ১৮২০ খ্ৰীষ্টাব্দে তাহারা উভয়েই জামূ-রাজপুতদিগের বগুতা স্বীকার করিলেন। তিন পুত্রের মধ্যে জ্যেষ্ঠপুত্র গোলাপ সিং আপত্তি দশাইলেন যে, তাহার পিতামহ, বিখ্যাত রণজিৎ দেওর ভ্রাতা ছিলেন। কিন্তু এই বংশ দোষযুক্ত এবং দরিদ্র বিধায়, গোলাপ সিং, খোসহাল সিং পরিচালিত সৈন্যদলে একজন অশ্বারোহী নিযুক্ত হইলেন। তিনি আপন কনিষ্ঠ ধিয়ান সিংহকে তথায় আনিলেন, প্রবল ক্ষমতাশালী তোষামোদকারীর ন্যায় তাহারা উভয়েই রণজিৎ সিংহের সৈন্যদলের বাহক-পদাতি নিযুক্ত হইয়াছিলেন। উভয়ের অধ্যবসায়ে, অধিকন্তু কনিষ্ঠ ভ্রাতার সদ্ব্যবহারে, তাহীদের প্রতি মহারাজার দৃষ্টি আকৰ্ষিত হইল। ধিয়ান সিং শীঘ্রই ব্রাহ্মণ-রাজগৃহাধ্যক্ষের স্থান অধিকার করিলেন । যাহা হউক, তিনি তাহাকে অবমাননা করেন নাই ; কারণ ধনী ব্যক্তির ন্যায় তাহারও সম্পত্তি এবং পদবী ছিল । গোলাপ সিং সামান্য একটি সৈন্যদলের অধিনায়ক হইলেন ; কিন্তু এই সময়ে রাজাওয়ারির কলহপ্রিয় মুসলমান শাসনকর্তাকে আক্রমণ করিয়া, তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করিলেন। অতঃপর এই পরিবারের জীবিকা-নির্বাহীর্থ জায়গীরস্বরূপ জাম্মু প্রদত্ত হইল, এবং সর্বকনিষ্ঠ স্বচেত সিং এবং অপর ভ্রাতৃদ্বয় সকলেই একে একে রাজা উপাধি প্রাপ্ত হইলেন ; এবং মহারাজার পরামর্শ মন্ত্রণায় সম্পূর্ণ ক্ষমতালাভ করিলেন। কিন্তু ইংরাজসম্পৰ্কীয় কোন পরামর্শ সম্বন্ধে তাহাঁদের কোন ক্ষমতা ছিল না ; —কারণ এস্থলে তাহার নিরপেক্ষ মতের আবশুক হইত এবং তাহার উপযোগিতাও যথেষ্ট ছিল । সরলহায় স্বচতুর গোলাপ সিং সর্বদা পার্বত্য প্রদেশেই থাকিতেন ; তথায় অন্যান্য রাজপুতদিগের উপর আধিপত্য বিস্তার করিতে, এবং পরিণামে লুদাকে রাজ্য সংস্থাপন উদ্বেপ্তে, তিনি শিধসৈন্য পরিচালনা করিতে লাগিলেন। এদিকে স্বল্পপরিদশী অথচ অধিকতর শিক্ষিত ধিয়ান সিং, সর্বদাই মহারাজের নিকট উপস্থিত থাকিয়, তাহার অভিলাষ ব্যক্ত হইবার পূর্বে তাহা জানিবার জন্য প্রতীক্ষা করিয়া থাকিতেন। আবার জন্যপক্ষে জাকজমকপ্রিয় স্বচেত সিং, কাহারও ক্ষমতা আত্মসাৎ না করিয়া, কিংবা কাহারও ' শত্রুতচরণ না করিয়া, আমোদপ্রিয় প্রিয়দর্শন সভাসদ ও সাহসী সৈনিক পুরুষের ন্যায় কলিষাপন করিতেন। নামমাত্র ধর্মাহুরাগী কবির, মুসলমান উজীজ-উদ্দীন, সাধারণ । তোষামোদকারীর ন্যায় নীচ স্থান অধিকার করেন নাই। কিন্তু তিনি প্রথম হইতে সর্বদা :