পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/৩৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইংরাজের সহিত যুদ্ধ ৩২৭ যুদ্ধক্ষেত্রে পরিচালনার জন্য কোন নায়ক ছিল না ; সুতরাং তাঁহার লুণ্ঠনের লোভ সম্বরণ করিতে পারিল না। ভারবাহী যে সকল পশু লুধিয়ানার নিকটে উপস্থিত হইতে পারে নাই, কিম্বা কামানের শব্দে ভয় পাইয়া যাহাদিগকে কৌশলে জাগরাওনের দিকে ফিরাইয়া লওয়া হইয়াছিল, তৎসমুদায় এক্ষণে শিখদিগের হস্তে পতিত হইল। সেই সকল যুদ্ধোপকরণ-বাহী গাড়ী প্রাপ্ত হইয়া, শিখগণ ইংরাজদিগের নিকট হইতে কামান কাড়িয়া লইয়াছে বলিয়া আস্ফালন করিতে লাগিল ॥৭৩ লুধিয়ানা মুক্ত হইল। কিন্তু এই খণ্ডযুদ্ধে ইংরাজগণ পরাজিত হওয়ায়, পতনোমুখ ভারতের রাজন্যবর্গের মনে বড়ই আনন্দের সঞ্চার হইল। তাহারা মনে করিলেন, গুরুগোপিন্দের শিষ্যগণের সাহসিকতায় ও দক্ষতায় তাহীদের বৈদেশিক প্রভুর ভীষণ সৈন্যবল এতদিনে বিধ্বস্ত হইল ; স্বদেশের প্রিয় সস্তানগণ জয়লাভ করিল। ইংরাজদিগের অধীনস্থ সিপাহী সৈন্যগণ এইবার পরস্পর গোপনে পরামর্শ আরম্ভ করিল ; তাহার কার্যত্যাগ করিয়া পুর্বাঞ্চলে তাহদের গৃহাভিমুখে পলায়নের স্বযোগ অন্বেষণ করিতে লাগিল। ইংরাজদিগের গণ্ডস্থলে কালিমার চিহ্ন লক্ষিত হইল ; জয়লাভ অপেক্ষা সংঘর্ষের চিন্তাই তাহাদিগকে আকুল করিয়া তুলিল। গবর্ণর-জেনারেল এবং প্রধান সেনাপতি এক্ষণে অবরোধোপযোগী কামানবাষ্ঠী শকট এবং যুদ্ধেপকরণাদির রক্ষক সৈন্যগণকে নিরাপদ করিবার জন্য বিচলিত হইয়া পড়িলেন। আক্রমণকারী বিপক্ষ সৈন্যের বিরুদ্ধে যে সকল সৈন্য প্রেরিত হইয়াছিল, তাহাদের রক্ষার জন্য এবং বিপক্ষপক্ষীয় সৈন্যের আক্রমণজনিত ক্ষতিপূরণার্থ শেষোক্ত ব্যবস্থাই এক্ষণে আবশ্বক হইয়া পড়িয়াছিল। পরাজিত সৈন্যদলের নেতা জীবনব্যাপী পরিশ্রমের পরে, এক্ষণে কলঙ্কপশরা মস্তকে লইলেন ; শীঘ্র তাহার সে কলঙ্ক মোচনের আশা রহিল না। অন্য পক্ষে শিখগণ আনন্দে উন্মত্ত হইল ; ইউরোপীয়গণকে বন্দী অবস্থায় লাহোরে লইয়া যাওয়ায়, তাহাদের জয়োল্লffসর অবধি রহিল না। লাল সিং এবং তেজ সিং মনে মনে ভয় পাইলেন। গোলাপ সিং যুগপৎ মন্ত্রী ও সেনানায়কপদে অভিষিক্ত হইয়াছিলেন ; তিনি এক্ষণে মনে মনে ভাবিতে লাগিলেন, তাহার অপেক্ষা বহুগুণে যাহারা শ্রেষ্ঠ, ‘খালসা" সৈন্য র্তাহাদিগকেও পরাজিত করিতে পারে, তাহারা এতই দৃঢ়বল সম্পন্ন। ৪৩। গোপনীয় পরামর্শের জন্য যে সভা হইয়াছিল, ১৯শে জানুয়ারী এবং ৩রা ফেব্রুয়ারী সেই সভায় গবর্ণর-জেনারেল যে পত্র লেখেন, এবং ১৮৪৫ খ্ৰীষ্টাব্দের ১লা ফেব্রুয়ারীর লর্ড গাফের প্রেরিত কাগজ-পত্র *As I (Compare the Governor-General to the Secret Committee 19th Jan.and 3rd February, and Lord Gough's despatch of the 1st February, 1845, ) ২১শে জানুয়ারীর খণ্ডযুদ্ধে ইংরাজ পক্ষের ৬৯ জন সৈন্য নিহত এবং ৬৮ জন সৈন্ত আহত হয়। ৭৭ জন সৈন্যকে धूजिब्रा পাওয়া যায় না। শেষোক্ত সংখ্যার কতকগুলি শিখদিগের হস্তে বন্দী হইয়াছিল ; অবশিষ্টগুলি দুই এক দিনের মধ্যে ফিরিয়া জাসিয়া, ব্রিটিশ সৈন্যদলে যোগদান করিয়াছিল। বন্দীদিগের মধ্যে মিঃ ব্যায়ণ নামক একজন ডাক্তার (Assistant Surgeon) এবং কতকগুলি ইউরোপীয় সৈন্য লাহোর প্রেরিত হইয়াছিল।