পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/৩৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিখ-ইতিহাস 86ט সিং, স্বদেশের, স্বজাতির জন্ত, শেষ মূহূর্ত পর্যন্ত যুদ্ধ করিয়া প্রাণ বিসর্জন দিলেন ; স্বদেশবাসীর রাশিঙ্কত মৃতভূপের মধ্যে র্তাহার মৃতদেহ পড়িয়া রহিল। তখন জন্মভূমি, স্বদেশ-রক্ষার্থে অন্যান্য সকলেও শুমি সিংহের উৎসাহে অনুপ্রাণিত হইল। বিপক্ষ ইংরাজ সৈন্যের নিরবচ্ছিন্ন অগ্নি-বর্ষণের মধ্যেও তাহার দুর্গ প্রাচীরের উপর দাড়াইয়া যুদ্ধ করিতে লাগিল। তাহারা তরবারি হস্তে বিপক্ষদিগের উপর পতিত হইল, এবং ইংরাজসৈন্য যেদিক হইতে আক্রমণ করিয়াছিল, সেই দিকে কামান ফিরাইয়া তাহাদিগকে আক্রমণের জন্য, শিখ-সৈন্য কামান-পরিচালক সৈন্যদিগকে উপদেশ প্রদান করিল। ভয় দুর্গ প্রাচীরের দুর্ভেদ্য অৰ্দ্ধাংশ বরাবর প্রায় অৰ্দ্ধঘণ্টা ধরিয়া ঘোরতর যুদ্ধ চলিল ;–লোমহর্ষণ হত্যাকাণ্ড সংসাধিত হইল। এক প্রাস্ত হইতে অপরপ্রান্ত পর্যন্ত দুর্গপ্রাচীর রক্তে রঞ্জিত হইয়া গেল ; এবং মৃত, অৰ্দ্ধমৃত ও মুমূর্ব: সৈন্যদেহে দুর্গ-পরিখা পরিপূর্ণ হইল। কর্ণবধিরকারী কামান গর্জন এবং অসংখ্য বন্দুকের ঘন ঘন অগ্ন্যুদগীরণের মধ্যে, তখনও ইংরাজপক্ষের জয়ধ্বনী অথবা ঘৃণাব্যঞ্জক ঘোর চীৎকার শব্দ শুনা যাইতেছিল। এবং অগণিত তরবারির বিদ্যুৎ-বালক তখনও স্পষ্টরূপে দৃষ্টিগোচর হইতেছিল ; অথবা সময় সময় অগ্ন্যুদগীরণকারী কামানসমূহ হইতে শূন্যগর্ভ গোল সমূহ নিপতিত হইয়া, মহাশন্ধে বিদীর্ণ হইতেছিল ; কখনও বা সেই প্রচণ্ড গোলার আঘাতে বিক্ষোভিত ধুম ও অনলসমূদ্র ভেদ করিয়া, বৃহৎ কাষ্ঠখণ্ড এবং বৃহৎ মৃত্তিকাস্তুপ শূন্যমার্গে উৎক্ষিপ্ত হইতে লাগিল। তৎকালে বোধ হইয়াছিল, যেন সৈন্যগণ সেই ধুম ও অগ্নি-সাগরে নিমজ্জিত হইয়া রহিয়াছে। তখন সেই লোমহর্ষণ যুদ্ধে, অস্ত্রের বঞ্চন এবং কামানের গভীর গর্জনের মধ্যেও ক্ষণকালের জন্যও তৎপ্রতি সকলেই মনঃসংযোগ করিলেন। কিন্তু ক্রমে ক্রমে রক্ষণোপযোগী সমুদায় স্থানই বৃটিশ সৈন্য অধিকার করিয়া বসিল। শিখসৈন্য ক্রমশঃই স্থতর শতদ্রু অভিমুখে পশ্চাৎ হটিতে লাগিল। বৃটিশ সৈন্য, অশ্বারোহী ও পদাতিক সৈন্যদলে বিভক্ত হইয়া, উভয় দিক হইতে শিখদিগকে আক্রমণ করিল ; কিন্তু এতৎসত্বেও শিখদিগের কেহই অধীনতা স্বীকারে সম্মত হইল না ;--গোবিন্দের শিষ্যগণের কেহই আশ্রয় প্রার্থনা করিল না। শিখগণ সর্বসময়েই বিজয়ী ইংরাজদিগের সন্মুখীন হইয়া, সদৰ্পে বাধা প্রদান করিল ; কেহ কেহ বা সগর্বে মৃদুমন্দ পদবিক্ষেপে রোষভরে চলিয়া গেল ; কিন্তু মৃত্যু অবধারিত জানিয়াও অধিকাংশ শিখসৈন্ত ভীমবেগে বিপুল ইংরাজ বাহিনীর সন্মুখীন হইয়া অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিল। পরাজিত শিখদিগের অদম্য সাহস, উৎসাহ ও বীরত্ব দেখিয়া, বিজয়ী বৃটিশ সৈন্য বিস্ময়াবিষ্ট ও হতবুদ্ধি হইল ; অসহায় মুমু সৈন্যের স্বশাব্যঞ্জক নিফল ভ্ৰকুটি ভঙ্গীমায়, বৃটিশ সৈন্ত আর তাঁহাদের প্রতি অন্ত্র নিক্ষেপ করিল না। কিন্তু সৈন্যের অধিনায়কগণ তখনও আপনাপন উদ্বেগু সাধন করিতে সমর্থ হন নাই। সুতরাং বীরোচিত প্রতিহিংসাবৃত্তি চরিতার্থের প্রলোভন বশতই হউক, অথবা নিজ নিজ স্বাধ সাধনোদেখেই হউক, সৈঙ্গের অধিনায়কগণ গোলন্দাজ সৈন্তদিগকে শতদ্রু নদীর খরস্রোতে অবতরণ করার জন্য জিদ করিতে