পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/৩৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইংরাজদিগের সহিত যুদ্ধ ogle. ব্যবহারে, ধর্মপ্রাণতা এবং ধর্মভীরতায় ব্রাহ্মণদিগের নিগৃঢ় সারগর্ভ দর্শনশাস্ত্র এবং পুরাণতত্বের মাহাত্মই ব্যক্ত হইয়া থাকে। প্রায় দুই সহস্ৰ বৎসর পূর্বে গ্ৰীকগণ, ব্রাহ্মণদিগের এই গবেষণাপুর্ণ দৰ্শন-শাস্ত্রের নীতি এবং যুক্তি-তর্কে বিমোহিত হইয়াছিলেন । মুসলমানগণ প্রথমে দেশ-ধ্বংসের নিমিত্তই আগমন করে। ভারতে আসিয়া প্রথমতঃ তাহার উপনিবেশ স্থাপন করিতে থাকে ; পরিশেষে বিজয়ী জাতিসমূহ পঙ্গপালের ন্যায় আসিয়া স্বর্ণভূমি ভারত-ক্ষেত্র ছাইয়া ফেলিল , তাহীদের প্রভাবে পরাজিত অধিবাসীদিগের ভাষায় এবং ভাবে পরিবর্তন ঘটিল ; বিজেতৃ-বৃন্দের সংসর্গে তাহারা ক্রমে পরিবতিত হইতে লাগিল। পরিশেষে বাদসাহ আকবরের রাজত্বকালে ভারতে ‘ইসলাম ধর্ম, একটি জাতীয় ধর্ম মধ্যে পরিগণিত হইল ; মকু এবং সেকেন্দর সাহের ( আলেকজাণ্ডারের ) সময়ে, ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় এবং বৈপ্তের মধ্যে যে স্বাতন্ত্র্য ছিল, বর্তমান সময়ে হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে ততটা ভেদ-ভেদ নাই ; বস্তুতঃ কয়েকটি বিশেষ বিশেষ স্থল ব্যতীত, অন্য কোন বিষয়ে তাহাদের সে স্বাতন্ত্র্য পরিলক্ষিত হয় না। হিন্দু ও মুসলমান দুইটি ভিন্ন জাতি ; তাহাদের ধর্মও পরস্পর বিভিন্ন। কিন্তু সামাজিক জীবনে বা গার্হস্থ জীবনে তাহারা পরম্পর মিলিয়া মিশিয়া বসবাস করিয়া থাকে । তাহারা পরস্পর পরম্পরের কার্য প্রণালীতে যোগদান করে ; পরম্পর পরম্পরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করিয়া থাকে ; এবং পরস্পর পরস্পরের কার্যপ্রণালী হৃদয়ঙ্গম করিতে সমর্থ হয়। এইরূপে তাঁহাদের পরস্পরের স্বাতন্ত্র্য এবং বিশেষত্ব ধীরে ধীরে অথচ নিশ্চিতরূপে তিরোহিত হইতেছে। স্বতরাং এতদুভয় জাতির ধ্বংস-সাধনে, তাহার সমাধি স্থলে নূতন উপাদানে ভবিষ্যতে কোন একটি সাধারণ ধর্ম-প্রথা বা সম্প্রদায় প্রবর্তিত হইতে পারিবে। ঘৃণিত শূদ্র জাতির-মারহাট, গুখৰ্ণ, শিখ প্রভৃতি জাতির-প্রাধান্য হেতু গ্রাম্য কৃষককুল এবং নগর ও সহর সমূহের ইত্তর শ্রেণীর মধ্যে আরও অধিক মিশ্রণ সংসাধিত হইয়াছে। এইরূপে পুরাতত্বের প্রতি সন্মান প্রদর্শনের পক্ষে কতকটা অন্তরায় স্বষ্টি করিয়াছে। কোন জাতির কথিত ভাষা অপেক্ষা, সেই জাতির ধর্ম-বিশ্বাস অনিশ্চিৎ বা ক্ষণস্থায়ী বলিয়া প্রতীয়মান হয়। আরব-দেশীয় ধর্মপ্রবর্তক মহম্মদ প্রচারিত ধর্ম কিংবা বেদ ও পুরাণতত্ব প্রভৃতির কোনটিকেই অনেক স্থলে বিশুদ্ধ ভাবে দেখিতে পাওয়া যায় না ; তবে ধর্ম-প্রাণ মোজাগণ এবং শিক্ষিত ব্ৰাহ্মণ পণ্ডিত অথবা উভয় ধর্মের ধনী এবং মহৎ ব্যক্তিগণই সেই সেই ধর্মের পবিত্রতা এ পর্যন্ত রক্ষা করিয়া আসিতেছেন। যে ক্ষমতা-বলে এই সমস্ত বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী অসংখ্য ভারতবাসীর উপর ইংলণ্ড আধিপত্য বিস্তার করিয়াছে ; ইংলণ্ড সেই ক্ষমতা বলেই এইক্ষণে ভারতবাসীর শাসন সংরক্ষণ করিতে সমর্থ। অধুনা ইংলণ্ডের শ্রেষ্ঠত্ব লাভে অপরাপর জাতি তৎপ্রতি ঈর্ষা পরবশ হইতে পারেন ; কিন্তু ইংলণ্ডের স্বসস্তান সাহসী ইংরাজগণ প্রাচ্যখণ্ডে যে গুরুতর কার্যভার ইংলণ্ডের হস্তে অর্পণ করিয়াছেন, সেই গুরুতর কার্য সম্পাদনে ইংরাজদেগের ক্ষণকালের জন্য চিন্তা করিয়া দেখা কর্তব্য। মানবের মঙ্গল-বিধানার্থ ইংলও যে মহৎ কার্যতার স্বহস্তে গ্রহণ করিয়াছেন, তৎসম্পাদনার্থ