পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/৪২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুলতান অধিকার 94. নগর-প্রাকার হইতে এক তোপধ্বনিতে হুইশের ঘোষণা প্রচারের প্রত্যুত্তর প্রদত্ত হইল । রেসিডেন্ট বিশ্বাস করিয়াছিলেন, মূলতান আক্রান্ত হইলেই মূলরাজ আত্মসমর্পণ করিতে বাধ্য হইবেন । কিন্তু এক্ষণে র্তাহাকে সে আশায় নিরাশ হইতে হইল। অধিকন্তু ইংরেজের দল হইতেও কতক কতক শিখ সৈন্য পলায়ন করিতে আরম্ভ করিল। শের সিংহ তুলুম্বায় অপেক্ষা করিবার জন্য ইংরেজ কর্তৃক আদিষ্ট হইয়াছিলেন। কিন্তু তিন ও আর সে আদেশ মানিলেন না ; তাহার পিতা ছত্রসিংহ হাজারে প্রদেশে ইংরেজের বিরুদ্ধে অস্ত্ৰধারণ করিয়াছেন শুনিয়া, তিনিও ইংরেজের প্রতি বিমুখ হইলেন । ৭ই সেপ্টেম্বর দিবাভাগে ইংরাজ পক্ষ মূলতান আক্রমণ করিলেন । ৯ই সেপ্টেম্বর রাত্ৰিযোগে মূলরাজের সৈন্যগণকে সম্মুখস্থ বাগান এবং বাট হইতে বিদূরিত করিবার চেষ্টা চলিতে লাগিল। কিন্তু রজনীর গাঢ় অন্ধকারে এবং নানারূপ বিশৃঙ্খলায় ইংরেজের সে আক্রমণ ব্যর্থ হইল। পরস্তু, আক্রমণ করিতে গিয়া বৃটিশ-পক্ষ বিতাড়িত হইলেন ; মূলরাজের ভরসা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাইল । অতঃপর ইংরেজ-পক্ষ হইতে দুই দিন কাল ক্রমাগত গোলাবর্ষণ আরম্ভ হইল ; কিন্তু তাহাতেও কোন স্বফল ফলিল না । ১২ই তারিখে দুর্গপ্রাচীরের বহির্ভাগে আসিয়া মূলরাজ যুদ্ধ আরম্ভ করিয়া দিলেন। অনেকক্ষণ উভয় পক্ষে ঘোরতর সংগ্রাম চলিল। কিন্তু সেই সংঘর্ষে মূগরাজ পরাজিত হইলেন। র্তাহার ৫• • শত সৈন্য যুদ্ধে নিহত হইল ; আক্রমণকারী ইংরেজপক্ষ নগর-প্রাকারের দিকে ৮০০ শত গজ অগ্রসর হইবার সুবিধা পাইল । এইবার ইংরাজ-পক্ষ যেখানে উপস্থিত হইল, সেখান হইতে গোলা চালাইলে অনায়াসেই সে গোলা নগর-প্রাচীর ভেদ করিতে পারে । নগর-ধ্বংসের পথ সুগম হইয়া আসিল বটে ; কিন্তু আর এক বিপত্তি উপস্থিত হইল । দুই দিনের যুদ্ধে যাহারা অগ্রসর হইয়াছিল, এইবার তাহারা ফিরিয়া দাড়াইল । বোধ হয়, কতকগুলি শিখ-সৈন্যের প্রাণে এইবার আত্ম-গ্লানি উপস্থিত হইল,—তাহাদের মনে স্বদেশ-প্রীতি জাগিয়া উঠিল । ইংরেজ, কণ্টকের দ্বারা কণ্টক উৎপাটনের চেষ্টা করিতেছেন, বোধ হয় এইবার তাহারা বুঝিতে পারিল । হাজারে-প্রদেশে শের সিংহের পিতা ছত্র সিংহ ইংরেজের বিরুদ্ধে অস্ত্ৰধারণ করায়, ইংরেজ পক্ষাবলম্বী তাহার পুত্র শের সিংহের প্রাণ ইতিপূর্বেই বিচলিত হইয়াছিল। ১৪ই সেপ্টেম্বর প্রাতঃকালে মূলতানের দিকে অগ্রসর হইবার সময়, তাহার মন সম্পূর্ণরূপে পরিবতিত হইল। তিনি মনে মনে ভাবিয়া দেখিলেন,—“আমি এ কি করিতেছি । বিদেশী বিধর্মীর পক্ষ অবলম্বন করিয়া, স্বদেশী, স্বজাতি, স্বধৰ্মীর বক্ষে শেলাঘাত করিতে বসিয়াছি।” সম্ভবতঃ এই অনুশোচনীয় র্তাহার প্রাণ র্কাদিয়া উঠিল। তিনি আপন সৈন্যদলের মধ্যে আদেশ প্রচার করিলেন,“ধরম খে দোসা” ‘অর্থাৎ খালসার’ নামে ধর্মের বাষ্ঠ, বাজান হউক। যখন এই সংবাদ ইংরেজ সেনাপতির নিকট উপস্থিত হইল, তাহার মন্তক ঘুরিয়া গেল। ‘খালসার নামে মুলতান আক্রমণকারী সৈন্যদল সত্য সত্যই যদি ক্ষেপিয় উঠে, তাহা হইলে দারুণ বিপত্তির সম্ভাবন। তিনি প্রধান প্রধান সৈনিক কর্মচারীদিগকে আহ্বান করিয়া, কর্তব্য