পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/৪৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

! পঞ্জাবের পরিণাম obሙፃ গুজরাটের যুদ্ধে ইংরেজের এই জয়লাভের পর, শের সিংহ আর যুদ্ধ চালাইতে ইচ্ছা করিলেন না। শের সিংহের পিতার নিকট আফগানগণ কতৃক মেজর লরেন্স বিক্রীত হইয়াছিলেন ; এ সংবাদ পূর্বেই বিবৃত হইয়াছে। মেজর লরেন্স এক্ষণে শের সিংহের আশ্রয়াধীন। গুজরাটের যুদ্ধের পর মেজর লরেন্সকে মুক্তি-প্রদান করিয়া, শের সিংহ র্তাহাকে ইংরেজ-শিবিরে প্রেরণ করিলেন। শের সিংহের পক্ষ হইয়া মেজর লরেন্স ইংরেজের সহিত সন্ধির ব্যবস্থা করেন, ইহাই তাহার অভিপ্রায় । কিন্তু ইংরেজ তখন যুদ্ধে জয়লাভ করিয়াছেন ; ইংরেজ তখন অহঙ্কারে বক্ষ স্ফীত করিয়া সগর্বে দণ্ডায়মান ; স্বতরাং সন্ধির প্রস্তাব র্তাহারা শুনিবেন কেন ? লরেন্স মুক্তি পাইলেন বটে ; কিন্তু শের সিংহের উদ্ধেশু সফল হইল না । ইংরেজ, শের সিংহের সহিত সন্ধি-স্থাপনের স্বীকৃত হইলেন না । - শের সিংহের সহিত সন্ধি তো হইলই না ; অধিকন্তু পঞ্জাবের অদৃষ্টচক্র একেবারে পরিবতিত হইল। গবর্ণর জেনারেল লর্ড ডালহাউলি পঞ্জাব গ্রাস করিবার জন্যই যে পঞ্জাবে এই সমরানল প্ৰজলিত করিয়া তুলিয়াছিলেন, শিখগণ প্রথমে তাহা বুঝিতে পারেন নাই। পঞ্জাবের নাবালক রাজা দলীপ সিংহই বা তাহার কি প্রকার বুঝিবেন ? তাহারই সাহায্যার্থ, তাহারই রাজ্যের স্বশৃঙ্খলা-বিধানের জন্য, ইংরেজ ভাল ব্যবস্থবন্দোবস্তই করিতেছেন,—বালকের কোমল প্রাণ ইহা ব্যতীত আর কি বুঝিতে পারে ? বোধ হয়, লাহোর-দরবারের অনেক সর্দারও এ সম্বন্ধে অন্ধকারে আচ্ছন্ন ছিলেন । কিন্তু যখন গুজরাটের যুদ্ধে ইংরেজ-পক্ষের জয়লাভ হইল, তখন সকল আঁধার অপস্থত হইল - লাহোর দরবারের চমক ভাঙ্গিল ;- শিখ-সর্দারগণ বুঝিতে পারিলেন,—ফুরাইল— র্তাহাদের সকল আশা-ভরসা চিরতরে ফুরাইল । কিন্তু দরবারের সদস্তগণ যখন লর্ড ডালহাউসির নিগৃঢ় উদ্বেগু বুঝিতে পারিলেন, তখন আর উপায় নাই । সৈন্যবল, সমস্তই ইংরেজের করতলগত ; শিখদিগের ধন-সম্পদ, সমস্তই ইংরেজের অধিকৃত ; শিখ সর্দারগণ ইংরেজের ক্রীড়নক-রূপে বিরাজমান ; স্থতরাং তাহারা আর কি করিবেন ? অত:পর সর্দারগণ সুবিধাজনক সন্ধির প্রার্থী হইলেন। কিন্তু স্থবিধা আর কি হইতে পারে ? ইংরেজ বলিলেন,--যাহারা বিদ্রোহে যোগদান করিয়াছিল, তাহারা উপযুক্তরূপ দও প্রাপ্ত হইবে ; যাহার কোনরূপ বিদ্রোহিত্যচরণ করেন নাই, তাহারা মিত্র বলিয়া গণ্য হইবেন। কিন্তু পঞ্জাবের দশা কি হইবে ? প্রশ্ন উঠিল,-পঞ্জাবের দশা কি হইবে ? ইংরেজ এক সন্ধি-পত্র প্রস্তুত করিলেন । সর্দারগণ সকলেই সেই সন্ধিপত্রে স্বাক্ষর করিতে বাধ্য হইলেন ; রণজিৎ সিংহের পুত্র একাদশবর্ষীয় বালক দলীপ সিংহকেও সেই সন্ধি-পত্রে স্বাক্ষর করান হইল। সন্ধিপত্রে পাঁচটি গর্ত লিখিত হইল। প্রথম সর্তে,-মহারাজ দলীপ সিংহকে চিরতরে পঞ্জাবের স্বত্ব-স্বামিত্ব ইংরেজের হস্তে অপর্ণ করিতে হইল ; শিখের বড় সাধের, বড় গৌরবের পঞ্জাব, বৃটিশের দাসত্ব-শৃঙ্খলে আবদ্ধ হইল। দ্বিতীয় সর্তে,—পৃথিবীর সাররত্ব কোহিমুর মণি দলীপ সিংহ ইংলণ্ডেশ্বরী মহারাণী ভিক্টোরিয়াকে প্রদান করিতে বাধ্য হইলেন। এক দিন আফগনিস্থানের ভূতপূর্ব আমীর সা-স্বজ